শ্বেত শুভ্র তুষারের মধ্যে বর্ণিল আলোকবর্তিকা। চলছে কনসার্ট, যাতে কণ্ঠ মেলানোর পাশাপাশি নাচে মাতোয়ারা দর্শনার্থীরা। শিশুরা চড়ছেন রাইডে, বিশেষ এই মুহূর্তকে ফ্রেমবন্দি করছেন বড়রা। খ্রিষ্টীয় বর্ষবরণের রাত এভাবেই পালন করেছেন মস্কোয় বসবাসরত রুশ বাসিন্দারা। নতুন বছরে সংঘাত বন্ধের প্রত্যাশা ছিল বেশিরভাগেরই কণ্ঠে।
স্থানীয় একজন রুশ নাগরিক বলেন, 'আশা করি নতুন বছরে আমাদের সেনারা সুস্থমতো দেশে ফিরে আসবে। আমরা তাদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। আমাদের মধ্যে সম্প্রীতি বাড়ুক। শান্তি ফিরে আসুক। ধোঁয়াচ্ছন্ন আকাশ আর দেখতে চাই না।'
মস্কো যতটা উল্লসিত, ঠিক ততটাই ম্রিয়মাণ কিয়েভ। যুদ্ধের কারণে গেল তিন বছর ধরে রাজধানীতে জারি রয়েছে কারফিউ। তাই মেইডেন স্কয়ারে ছিল না কোনো আয়োজন। ঐতিহাসিক মাদারল্যান্ড মনুমেন্ট ছাড়া দেশজুড়ে অনুপস্থিত ছিল আলোকবাতির রোশনাই। দুই দেশের ভিন্নচিত্রই বলে দিচ্ছে যুদ্ধে কোন দেশের অবস্থান কেমন।
তবে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। জানান, ইউক্রেনের পাশে আছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন বছরে নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট পুতিনের আগ্রাসন বন্ধ করবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, 'উপহার হিসেবে কাউকে শান্তি দেয়া হয় না। যদিও আমরা শান্তি পুনরায় প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবো। ডোনাল্ড ট্রাম্প পুতিনের আগ্রাসন বন্ধ করবেন, এ বিষয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই।'
টানা ২৫তম বর্ষবরণের রাতে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেয়ার মাধ্যমে ইতিহাস গড়লেন ভ্লাদিমির পুতিন। রুশ প্রেসিডেন্ট জানান, ঐক্যবদ্ধ থাকার মাধ্যমে নতুন বছর সব বাধা টপকাবে জনগণ। যদিও যুদ্ধ কীভাবে শেষ হবে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি তিনি।
ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, 'চলতি শতাব্দীর প্রথম ২৪ বছরে অনেক বাধা বিপত্তি আমরা অতিক্রম করেছি। আগামী বছরও এই কাজ করবো। ঐক্যবদ্ধ থাকার পাশাপাশি মাতৃভূমিকে রক্ষায় আমরা লড়ে যাবো।'
বর্ষবরণের কয়েকঘণ্টা আগে পশ্চিমাঞ্চলীয় স্মোলেনস্ক শহরে বড় ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। অর্ধশতাধিক ড্রোন প্রতিহতের দাবি করেছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।