একের পর এক পদক্ষেপের মাধ্যমে রাশিয়াকে ক্ষেপিয়ে তুলছে ইউক্রেন। এতে শঙ্কা বাড়ছে পরমাণু যুদ্ধের। ইতোমধ্যে ক্ষিপ্ত রাশিয়া নিপ্রো অঞ্চলকে লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করেছে আন্তঃমহাদেশিয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। পাশাপাশি এই অভিযানে ব্যবহার করা হয় একটি কিনঝাল ও ৭টি ক্রুজ মিসাইল। এখনও হামলায় হতাহত কিংবা ক্ষয়ক্ষতির তথ্য মিলেনি।
যুক্তরাষ্ট্রের আতাকামাসের পর যুক্তরাজ্যের স্টর্ম শ্যাডো ক্রুজ মিসাইলের মাধ্যমে রাশিয়ায় হামলা চালিয়েছে জেলেনস্কির সেনারা।
বুধবার (২০ নভেম্বর) রাতে রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলগোরোদ অঞ্চলের গুবকিন শহরে ১২টি মিসাইল দিয়ে হামলা করেছে কিয়েভ। গুড়িয়ে ফেলা হয়েছে একটি কমান্ড পোস্ট। কিয়েভের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, পুতিনের আগ্রাসন রুখতে সর্বশক্তি ব্যবহার করবে ইউক্রেন।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ বলেন, ‘আমরা দেশকে রক্ষা করার জন্য সব ধরনের উপায় ব্যবহার করছি। বিস্তারিত কিছু বলবো না। কিন্তু আমরা রাশিয়াকে প্রতিক্রিয়া দেখাতে সক্ষম।’
সম্প্রতি বাইডেন প্রশাসন তাদের সরবরাহকৃত অস্ত্র রাশিয়ায় হামলায় ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। তবে এখনও ব্রিটিশ সমরাস্ত্র ব্যবহারে স্টারমার প্রশাসনের অনুমতি মেলেনি। তাই এ ঘটনায় কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা জানিয়েছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর। বিশ্লেষকদের দাবি, এমন ঘটনা দুই দেশের সম্পর্কে ফাটলের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি মার্কিন কিংবা ব্রিটিশ অস্ত্রের ব্যবহার ঠেকাতে পারবে না ইউক্রেনের পতন।
চ্যাথাম হাউজের ডিরেক্টর জেমস নিক্সি বলেন, ‘আমাদের বোঝা উচিত, এটা সর্ব রোগের ওষুধ নয়, যা ইউক্রেনকে যুদ্ধে জয় পেতে সহায়তা করবে। খেলাধুলার মতো হয়তো কিছুটা লাভবান হওয়া সম্ভব। কিন্তু এই ছোট বিষয়গুলো যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনের কাজে আসবে না। যদিও তারা এটি ভেবেই বসে আছেন।’
রাশিয়ার পরিবর্তিত নিউক্লিয়ার ডকট্রিন অনুযায়ী, এমন হামলার প্রেক্ষিতে ইউক্রেনে পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগ করতে পারে পুতিন সেনারা। দেশটির ফরেন ইন্টিলিজেন্স প্রধান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, পশ্চিমাদের এমন সহায়তার বিরুদ্ধে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর ওপরেও হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। ক্রেমলিন থেকে জানানো হয়েছে, কিয়েভে সংঘাত বন্ধ করা মস্কোর জন্য লাভজনক নয়। যদিও আলোচনার দরজা খোলা রেখেছেন পুতিন।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ বলেন, ‘রুশ প্রেসিডেন্ট বারবার বলেছেন, আলোচনার দরজা খোলা আছে। ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, সংঘাত বন্ধ করা আমাদের জন্য কাজে আসবে না। আমরা এই যুদ্ধে লক্ষ্য অর্জনের জন্য নেমেছি যা সবাই জানেন।’
বুধবার রাতে কিয়েভে লক্ষ্য করে হামলা চালায় রাশিয়া। যদিও হামলা সফলভাবে প্রতিহত করেছে দেশটির প্রতিরক্ষাবাহিনী। তাই ইউক্রেনের রাজধানীতে বন্ধ থাকা মার্কিন দূতাবাস ১দিন পর পুনরায় চালু করা হয়েছে। তবে এখনও বন্ধ রয়েছে ইতালিয়ান, গ্রিক ও স্প্যানিশ দূতাবাস।