ব্রেক্সিট থেকে বের হবার পর একদিকে যেমন টালমাটাল যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি সেই সঙ্গে পূর্ণ মেয়াদে স্থায়ী হতে পারেনি কোনো সরকার। তাই এবার দেশটির পার্লামেন্ট নির্বাচনের দিকে চোখ রয়েছে গোটা বিশ্বের। কেননা যুক্তরাজ্যের এ নির্বাচন শুধু ব্রিটিশদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, সমীকরণ পাল্টে দিতে পারে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও। এ নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম 'দ্য গার্ডিয়ান'।
সেখানে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট নির্বাচন বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে যাচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে। কেননা নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হলে ইউক্রেনের জন্য সামরিক সাহায্য বরাদ্দ বন্ধ করে দিতে পারেন তিনি। সেক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে কিয়েভকে। এরই মধ্যে দেশটির কনজারভেটিভ পার্টির নেতারা জানিয়েছেন ইউক্রেনকে সহায়তায় বিশ্ব নেতৃত্বের ভূমিকা রাখবে তারা। আশা করা হচ্ছে লেবার পার্টির নেতা কেইর স্টারমারের ভূমিকাও একই থাকবে।
ইসরাইল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে বরাবরই তেল আবিবকে অন্ধ সমর্থন দিয়ে আসছে যুক্তরাজ্য। এর আগের নির্বাচনগুলোতে দেখা যায়, কনজারভেটিভ পার্টিগুলোর ওপর ইসরাইলের বেশি সমর্থন ছিলো। তবে এবার লেবার পার্টির ওপরও ভরসা রেখেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। কোনো দলই এই ইস্যুতে তাদের নীতি পরিবর্তন করবে না বলে মত বিশ্লেষকদের।
ইউক্রেন-ইসরাইল যুক্তরাজ্যের নির্বাচন নিয়ে মাথা ঘামালেও যুক্তরাষ্ট্রের মূল ফোকাস রয়েছে তাদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে। যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভ ও লেবার দুই দলের সঙ্গেই মার্কিন ডেমোক্র্যাট নেতা জো বাইডেনের সুসম্পর্ক থাকলেও রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবশ্য কনজারভেটিভদের সঙ্গে বেশি সখ্যতা।
চীন সরকারও চায় যুক্তরাজ্যে লেবার পার্টি ক্ষমতায় আসুক। এর পেছনে অবশ্য বেশ কয়েকটি কারণও রয়েছে। 'চীনের অর্থনীতি যুক্তরাজ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ' কনজারভেটিভ নেতা ঋষি সুনাকের এমন মন্তব্যে গেল কয়েকদিন আগে নিন্দা জানিয়েছে বেইজিং। এছাড়াও দেশিয় স্থাপনা নির্মাণে চীনের প্রভাব কমাতে চায় দলটি। তাই শি জিনপিংসহ বেইজিংয়ের চাওয়া কেইর স্টারমার সরকার গঠন করুক।
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যে যে দলই ক্ষমতায় আসুক, সাদরে স্বাগত জানাবে তারা।