২২ মাস ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তীব্রতা এ পর্যায়ে এসে মাঠে কিছুটা কমলেও, গরম কূটনৈতিক আলোচনার টেবিল। যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টে ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তার বিল বাতিল হওয়ার পরই চিন্তার ভাজ কপালে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির। তবে মিত্রপক্ষ যুক্তরাষ্ট্র কোনভাবেই তাদের বিপক্ষে অবস্থান নেবে না বলে আশা তার।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, খুবই কঠোর পরিশ্রম করছি আমরা। আমি নিশ্চিত যুক্তরাষ্ট্র বিপক্ষে অবস্থান নেবে না। তারা আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী আবারও সহায়তা দেবে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনও আমাদের পাশে রয়েছে। ৫০ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা বিল ইতোমধ্যেই পাশ হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্টে।
যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা বন্ধে যখন বেশ চাপে রয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট, তখন নতুন করে সামরিক বাহিনীতে সেনা নিয়োগের কথা জানান দেশটির প্রতিরক্ষা বিভাগ। দাবি, রাশিয়াকে প্রতিরোধ করতে আরও সাড়ে ৪ থেকে ৫ লাখ সেনা দরকার তাদের।
জবাবে জেলেনস্কি জানান, এতো বিপুল সেনা যোগদানে প্রচুর আর্থিক সহায়তা দরকার। আর এ পরিস্থিতিতে অর্থ সংকটই মূল বাধা।
তিনি আরও বলেন, সেনাবাহিনীর সঙ্গে বৈঠকের সময় তারা অতিরিক্ত সাড়ে ৪ থেকে ৫ লাখ সেনা নিয়োগের দাবি জানিয়েছে। এতো সেনা নিয়োগের ক্ষেত্রে অনেক বিষয় ভাবতে হবে। অনেক অর্থ সহায়তারও দরকার হবে।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট যখন পাহাড় সমান দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তখন রুশ প্রেসিডেন্ট তাদের সৈন্যদের সাফল্য উদযাপনে ব্যস্ত। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) মস্কোতে একদল সেনাকে তাদের চৌকস দক্ষতার জন্য গোল্ড স্টার প্রদান করেন পুতিন।
সেসময় নতুন অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম পরিদর্শন করেন তিনি। ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা যায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সুইগো ও সেনাপ্রধানকে।
অস্ত্র পরিদর্শন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট জানান, ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি তারা। তবে অবশ্যই সেক্ষেত্রে রাশিয়ার জাতীয় স্বার্থ প্রাধান্য পাবে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমারা মিলে ইউক্রেনের সঙ্গে আমাদের সংঘাতে জড়াতে বাধ্য করেছে। রাশিয়া ও ইউরোপকেও আলাদা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুদ্ধের এ পর্যায়ে এসে যুদ্ধের ময়দান থেকে পিছপা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আর্থিক বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। আমেরিকার ষড়যন্ত্র সফল হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের অপেক্ষায় রয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। আর এর আগ পর্যন্ত একচুলও ইউক্রেনকে ছাড় দেয়া হবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন রুশ প্রেসিডেন্ট।