সন্দেহভাজন চিকিৎসকের বাড়ি থেকে জব্দ বিস্ফোরকেই বিস্ফোরণ, নিহত বেড়ে ৯

থানায় বিস্ফোরক বিস্ফোরণ
থানায় বিস্ফোরক বিস্ফোরণ | ছবি: সংগৃহীত
0

দিল্লির লাল কেল্লায় বিস্ফোরণের পর, সন্দেহভাজন চিকিৎসকের বাড়ি থেকে জব্দ বিস্ফোরকই এবার বিস্ফোরিত হলো ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগরের একটি পুলিশ স্টেশনে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নয় জনের প্রাণহানি হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ২৯ জন। যাদের অধিকাংশই পুলিশ কর্মকর্তা ও ফরেনসিক দলের সদস্য। পুলিশের ধারণা, ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইসগুলো ঠিকমতো জোড়া লাগানো ছিল না, আর সেখান থেকেই এমন দুর্ঘটনা।

দিল্লির লাল কেল্লায় ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণের তিন দিনের মাথায় আবারও বিস্ফোরণের কবলে ভারত। জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগরের যে পুলিশ স্টেশন থেকে দিল্লির লাল কেল্লায় বিস্ফোরণের ঘটনার প্রথম সূত্র মিলেছিল, এবার দুর্ঘটনার কবলে সেই শ্রীনগরের নোওগাম স্টেশন। আর বিস্ফোরণটি ঘটেছেও হরিয়ানা রাজ্যের ফরিদাবাদ থেকে জব্দ করা বিস্ফোরক পরীক্ষা নিরীক্ষার সময়।

সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসী সংগঠন জইস-ই-মোহাম্মদের কিছু পোস্টার খুঁজে পায় পুলিশ। এর জেরে অক্টোবরে ভারতের বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় অ্যামোনিয়াম নাইট্রেডের মতো মারাত্মক বিস্ফোরক। আটক করা হয় হয় বেশ কয়েকজন চিকিৎসককে। যারা হোয়াইট কলার টেরর ইকোসিস্টেমের মধ্যে থেকে বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো বলে ধারণা করে পুলিশ। তাদের দাবি, অক্টোবরে আটককৃত অনন্তনাগের সরকারি মেডিকেল কলেজের কর্মকর্তা ডাক্তার আদিল আহমেদ দিল্লির লাল কেল্লা বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের একজন সক্রিয় সদস্য।

আদিলকে আটকের পর হরিয়ানার ফরিদাবাদের আল-ফালাহ মেডিকেল কলেজের আরেক চিকিৎসক মুজাম্মিল শাকিলকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। শাকিলের বাড়ি থেকে প্রায় তিন কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেড উদ্ধার করার কথা জানায় জম্মু-কাশ্মীর ও হরিয়ানা পুলিশের যৌথ দল।

আরও পড়ুন:

এরপর লাল কেল্লা বিস্ফোরণের জেরে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে চলে যায় ভারত। শুরু হয় তদন্ত। জব্দ করা বিস্ফোরক আর আটককৃত ওই চিকিৎসকদের সঙ্গে লাল কেল্লা বিস্ফোরণের সরাসরি যোগসূত্র পান তদন্তকারী কর্মকর্তারা। ঘটনাচক্রে গেল শুক্রবার রাতে ফরিদাবাদ থেকে উদ্ধার করা ওই বিস্ফোরক পদার্থের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয় নোওগাম পুলিশ স্টেশনে। দুর্ঘটনাবশত সেখানেই ঘটে গেছে আরেক বিস্ফোরণ।

পুলিশের সূত্র বলছে, শুক্রবার রাতে শ্রীনগরের স্থানীয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে এ বিস্ফোরকের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছিলেন ফরেনসিক দলের সদস্যরা। কিন্তু ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইসগুলো খুব তাড়াহুড়ো করে জোড়া লাগানো হয়েছিল। এগুলা নাড়াচাড়া করতে গিয়ে ফরেনসিক বিভাগ বুঝতে পারেনি, যেকোনো সময় এখান থেকে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।

বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলেই বেশ কয়েকজনের প্রাণহানি হয়েছে। যাদের অধিকাংশই ফরেনসিক বিভাগ ও ওই থানার কর্মকর্তা। এছাড়া শ্রীনগর প্রশাসনের দুই প্রতিনিধিও সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে। আহতদের ভারতীয় সেনাদের বিশেষায়িত হাসপাতাল ও শের-ই-কাশ্মীর ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সাইন্সে নেয়া হয়েছে।

এসএস