অত্যাধুনিক রণতরী যুক্ত করে বিশ্বকে কী বার্তা দিতে চাইছে চীন?

অত্যাধুনিক বিমানবাহী রণতরী ফুজিয়ান
অত্যাধুনিক বিমানবাহী রণতরী ফুজিয়ান | ছবি: সংগৃহীত
1

যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া আর কারও কাছে নেই; নৌবহরে ফুজিয়ান নামে অত্যাধুনিক এমন বিমানবাহী রণতরী যুক্ত করে বিশ্বকে কী বার্তা দিতে চাইছে চীন? তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা না কি পূর্ব এশিয়ায় নিজেদের প্রভাব বিস্তারের ইঙ্গিত? তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। তবে এর মাধ্যমে বৈশ্বিক মঞ্চে বেইজিং যে নিজেদের সামরিক শক্তি অগ্রযাত্রার জানান দিতে চাইছে তা বলাই যায়।

নৌবহরে তৃতীয় ও সবচেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরী ফুজিয়ান যুক্ত করে বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে চীন। এতে আলোচনা জমে উঠেছে বেইজিংয়ের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি ও নৌক্ষমতা প্রসঙ্গে।

নৌ-আধিপত্যে যুক্তরাষ্ট্রকে টেক্কা দিতেই চীন এ পথে হাঁটছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। কারণ যেকোনো সময় চীন-তাইওয়ান উত্তেজনা চরমে পৌঁছালেই রণতরী মোতায়েন করে বেইজিংকে দমানোর চেষ্টা করে তাইপের ঘনিষ্ঠ মিত্র ওয়াশিংটন। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রেসিডেন্ট শি-জিনপিং অত্যাধুনিক বিমানবাহী রণতরী তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন বলে মনে করা হয়। এটির নামকরণেও মেলে সেই আভাস। তাইওয়ানের বিপরীতে অবস্থিত ফুজিয়ান প্রদেশের নামানুসারেই রণতরীর নাম রেখেছে চীন।

এখন বড় প্রশ্ন, শক্তির দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও কী এগিয়ে চীনের বিমানবাহী রণতরী ফুজিয়ান? তথ্য বলছে, এটিতে ব্যবহার হয়েছে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক এয়ারক্রাফট লঞ্চ সিস্টেম বা ‘ইমালস’। এতে রণতরীতে থাকা যুদ্ধবিমানগুলো অনেক বেশি অস্ত্র ও জ্বালানি নিয়ে উড়তে এবং দূরে থাকা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাধুনিক ফোর্ড-শ্রেণির রণতরী ছাড়া আর কোনো দেশের রণতরীতে নেই ইমালস প্রযুক্তি।

আরও পড়ুন:

চীনা গণমাধ্যম বলছে, একই প্রযুক্তি হলেও যুক্তরাষ্ট্রের রণতরী থেকেও ফুজিয়ান বেশি শক্তিশালী। আরও এগিয়ে থাকতে আরেকটি রণতরী তৈরির কাজও শুরু করেছে বেইজিং। যেটিতে শুধু ইমালস প্রযুক্তিই নয়, পারমাণবিক শক্তিচালিত হবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

এ অবস্থায় নতুন করে আলোচনায় পারমাণবিক অস্ত্রখাতে চীনের অগ্রগতি প্রসঙ্গ। চীন-রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার অভিযোগ তুলে সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে ফের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা শুরুর হুমকির পর থেকে যা কয়েকগুণ বেড়েছে। বিভিন্ন সংস্থার পরিসংখ্যান ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য বলছে- যেকোনো দেশের তুলনায় দ্রুতগতিতে পারমাণবিক অস্ত্রের মজুত বাড়াচ্ছে চীন।

স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউট বলছে, ২০২৩ সাল থেকে প্রতিবছর প্রায় ১০০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড তৈরি করছে বেইজিং। দক্ষিণ চীন সাগর, পূর্ব চীন সাগর এবং পীতসাগরের জলসীমা- জাপান, তাইওয়ান এবং ফিলিপিন্সের চারপাশে আধিপত্য বিস্তারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বেইজিংয়ের উন্নত বিমানবাহী রণতরীর পাশাপাশি পারমাণবিক অস্ত্রখাতে এগিয়ে যেতে চাইছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এসএস