সহিংস আন্দোলনের মুখে নেপালে কেপি শর্মা সরকারের পতন হলেও তার নৃশংসতার ছাপ বয়ে বেড়াচ্ছেন আন্দোলনে আহত হওয়া জেন-জিসহ শতাধিক মানুষ। দেশটির ট্রমা সেন্টারে আহতদের চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকরা জানান, এটি তাদের জন্য ভয়াবহ অভিজ্ঞতা।
আন্দোলনকারীরা মাথা, বুক এবং পেটে গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। হাসপাতালে আসার পর অনেককেই বাঁচাতে পারেননি চিকিৎসকরা। এমন নৃশংসতা অকল্পনীয় বলেও জানান তারা।
ডাক্তারদের মতে, হাসপাতালে এমন বিপুল সংখ্যক আহতদের আগমন আগে কখনও দেখা যায়নি। চিকিৎসকরা অপারেশন থিয়েটারে কাজ করছেন, জরুরি সেবা প্রদান করছেন। কিন্তু এত বড় বিপর্যয়ের জন্য হাসপাতালগুলোও প্রস্তুত ছিল না বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
এদিকে বিক্ষোভের ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে নেপালের পর্যটন শিল্প। বহু পর্যটন কেন্দ্র, হোটেল এবং দোকানপাট ভাঙচুর এবং আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত কয়েক বছরে নেপাল পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে উঠে এসেছিল। কিন্তু এই ধরনের সহিংসতা পর্যটকদের জন্য আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন:
পর্যটকরা এখন কাঁচা রাস্তা, দোকানপাট বন্ধ এবং নিরাপত্তাহীনতা দেখতে পাচ্ছে। অনেক বিদেশি পর্যটক তাদের সফর বাতিল করেছেন এবং কিছু হোটেলও তাদের বুকিং বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে। চলমান অস্থিরতা চলতে থাকলে পর্যটন শিল্পে এই ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন দেশটির নবগঠিত অন্তর্বর্তী সরকার। নবনিযুক্ত অর্থমন্ত্রী রমেশ্বর খানাল এরইমধ্যে বাজেটের ছোট প্রকল্পগুলো কমিয়ে এনে ১০০ বিলিয়ন রুপি সাশ্রয় করার পরিকল্পনা নিয়েছেন। অর্থমন্ত্রী আরও জানান, নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্যে কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো বাতিল করা হবে।
এছাড়া আন্দোলনে নিহতদের শহিদ ঘোষণা করে তাদের পরিবারকে নগদ অর্থ সাহায্য দেয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সোমবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওম প্রকাশ আর্যাল জানান, নিহতদের পরিবারকে এক মিলিয়ন রুপি প্রদান করা হবে। এছাড়া, অতিরিক্ত ৫ লাখ রুপি অন্যান্য খরচের জন্য দেওয়া হবে। জেন-জি শহিদদের স্মরণে একটি জেন-জি জাগরণ স্মৃতিসৌধ পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে বলেও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।




