দিল্লি গেট কিংবা রাষ্ট্রপতি ভবন, ভারতের রাজধানীর সবপ্রান্তের চিত্রই ঝাপসা ও ধোঁয়াচ্ছন্ন। দীপাবলির পর থেকেই বিষাক্ত বায়ুতে সয়লাব নয়াদিল্লির আকাশ। টানা ১৫ দিন ধরে একিউআই সূচকে রাজধানীর বেশকিছু অঞ্চলে বায়ুমান ঘোরাফেরা করছে ৪০০ এর আশেপাশে। বুধবার (১৩ নভেমব্র) যা ৫০০ এর ঘর ছাড়িয়ে যায়।
রানওয়ে পরিষ্কারভাবে না দেখা যাওয়ায় দিল্লি থেকে ডাইভার্ট করা হয়েছে বেশ কিছু ফ্লাইট। ইন্দিরা গান্ধী এয়ারপোর্টে রানওয়ে ভিজিবিলিটি নেমে এসেছে মাত্র ১৫০ মিটারে। দিন দিন গ্যাস চেম্বারে পরিণত হতে থাকা রাজধানীর এই করুণ পরিণতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বাসিন্দারা।
স্থানীয় একজন বলেন, 'প্রতিবছর এই সময় দিল্লিতে বায়ুদূষণ বাড়ছে। যখন ছোট ছিলাম, এখান থেকে রাষ্ট্রপতি ভবন দেখতে পারতাম। এখন চারদিকে ধোয়া দেখছি।'
একজন কর্মজীবী বলেন, 'রিকশা চালাতে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। চোখে জ্বালা, নাক দিয়ে পানি পড়া, গলা আর বুক ব্যথা নিয়মিত দেখা যাচ্ছে।'
ক্লাউড সিডিংয়ের মাধ্যমে গেল বছর বায়ু দূষণ কমিয়ে আনার চিন্তা করা হলেও আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় ভেস্তে যায় পরিকল্পনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে সমন্বয় করার আহ্বান সাধারণ জনগণের।
এদিকে দিল্লির সঙ্গে যেন পাল্লা দিয়ে বায়ুদূষণ বেড়েছে পাকিস্তানের লাহোরে। গেল সপ্তাহে শহরটিতে একিউআই সূচকে বায়ুমান এক হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে যায়। গত কয়েকদিনে কিছুটা উন্নতি হলেও শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যায় এখনও বহু মানুষ হাসপাতালে। এ অবস্থায় ১৭ তারিখ পর্যন্ত লাহোরের উন্মুক্ত স্থানে জনসমাগম নিষিদ্ধ রয়েছে, দোকানপাট ও শপিংমল বন্ধ করতে হচ্ছে রাত আটটার মধ্যে। পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
পাকিস্তানের পরিবেশ আইনজীবী আহমেদ রাফায় আলম বলেন, 'লাহোরের শিমলা পাহাড়ির কয়েকটি দোকানে বারবিকিউ বন্ধের ঘোষণা দিয়ে আপনি বায়ু দূষণ থামানোর চেষ্টা করছেন। এমন কাজ বোকার স্বর্গে বাস করার মতো। এ ধরনের লকডাউনে কোনো সুফল নেই।'
ক্লাইমেট অ্যাকশন সেন্টার এর প্রতিবেদন বলছে, লাহোরের ৮০ শতাংশ বায়ু দূষণের জন্য দায়ী যানবাহনে ব্যবহৃত পেট্রোল ও ডিজেলের নিঃসরণ। পাকিস্তানে প্রতিবছর বায়ুদূষণের প্রভাবে প্রাণ হারাণ এক লাখ মানুষ।