এশিয়া
বিদেশে এখন
0

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কে বড় অপব্যবহারকারী ভারত: ট্রাম্প

ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যিক সম্পর্কের সবচেয়ে বড় অপব্যবহারকারী ছিলো ভারত। এমন বিতর্কিত মন্তব্য করে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন যুক্তরাষ্ট্র সফরে তার সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। মিশিগানে নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প আরও বলেন, প্রেসিডেন্টের পদটাই বিপজ্জনক। এদিকে ফিলাডেলফিয়াতে কৃষ্ণাঙ্গ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দী ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস বলেছেন, দেশে রাজনৈতিক সহিংসতার কোন স্থান নেই। এদিকে, দুই মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মিশিগানে বিক্ষোভ র‌্যালি করেছে তার সমর্থকরা।

বিতর্কিত মন্তব্য আর উদ্ভট সব বক্তব্যের জন্য বরাবরই খবরের শিরোনাম হয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরই ধারাবাহিকতায় এবার ভারতকে নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে আরও একবার আলোচনায় সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

রোববার দ্বিতীয়বারের মতো হত্যাচেষ্টার ঘটনার শিকার হওয়ার পর এই প্রথম কোন প্রচারণায় যোগ দিলেন ট্রাম্প।

মিশিগানে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে এক বক্তব্যে তিনি বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের সবচেয়ে বেশি অপব্যবহার করেছে ভারত।'একই বক্তব্যে তিনি জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের আগ্রহ প্রকাশ করেন।

মিশিগানে নির্বাচনী প্রচারণায় ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এখন টিভি

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, 'ভারতের প্রসঙ্গ যখন আসে, তখন বলবো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কে বড় অপব্যবহারকারী দেশ ভারত্তা। চলতি সপ্তাহেই মোদির সঙ্গে দেখা করবো আমি। তবে বর্তমানে অনেকেই অনেক রকম খেলা খেলছে আমাদের বিরুদ্ধে, ভারত সেটা করছে না।'

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন এবং অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান আর যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা জোট কোয়াড এর সম্মেলন অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় ভারতের সঙ্গে বেশি স্থিতিশীল সম্পর্ক ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। ২০২০ সালে ভারত সফর করেছিলেন ট্রাম্প। নামাস্তে ট্রাম্প ব্যানারে বিশ্বের বৃহত্তম স্টেডিয়ামে ট্রাম্পের আগমন উপলক্ষে বিশাল র‌্যালির আয়োজনও করেছিলেন মোদি। বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনকে প্রতিপক্ষ হিসেবে টেক্কা দিতে এশিয়াতে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বারোপ করছে ওয়াশিংটন।

২০২০ সালে ভারত সফর করেছিলেন ট্রাম্প। ছবি: এখন টিভি

ট্রাম্প আরও বলেন, তাকে হত্যাচেষ্টার ঘটনার পর কামালা হ্যারিসের ফোন পেয়েছেন তিনি।

এদিকে ফিলাডেলফিয়াতে ন্যাশনাল এসোসিয়েশন অব ব্ল্যাক জার্নালিস্টের ফোরামে অংশ নিয়ে ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার ইস্যুতে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস বলেন, দেশে বন্দুক সহিংসতা বন্ধে দ্রুতই জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশে রাজনৈতিক সংঘাতের কোন জায়গা নেই। কামালার কৃষ্ণাঙ্গ পরিচয় নিয়ে ট্রাম্পের কটাক্ষের উত্তরে তিনি বলেন, কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের সমর্থন আদায়ও একটা যোগ্যতা।

কামালা হ্যারিস বলেন, 'কৃষ্ণাঙ্গদের কেউ পকেটে নিয়ে ঘোরে না, তারাও ভোটার। তাদের ভোট জেতাও যোগ্যতা। দেশে রাজনৈতিক সহিংসতার কোন জায়গা নেই। এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছি গণতন্ত্রের জন্য লড়তে। গণতন্ত্রে রাজনৈতিক সহিংসতা থাকতে পারবে না । আমাদের সহিষ্ণুতার সঙ্গে বিতর্ক আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।'

ফিলাডেলফিয়াতে ন্যাশনাল এসোসিয়েশন অব ব্ল্যাক জার্নালিস্টের ফোরামে কামালা হ্যারিস। ছবি: এখন টিভি

এদিকে দুই মাসের ব্যবধানে টানা দুইবার ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে হোয়াইট হাউজ বলছে, ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় রানিং মেট জেডি ভ্য্যান্সের বক্তব্য বিপজ্জনক। দেশে রাজনৈতিক সহিংসতা ঠেকাতে ডেমোক্র্যাট-রিপাবলিকান সব পক্ষকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।

হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, ট্রাম্প একজন প্রার্থী। যখনই কেউ নেতৃত্বে থাকবে, তখনই তাকে সাধারণ মানুষ নিয়ে ভাবতে হবে । কোন ধরনের উস্কানিমূলক মন্তব্য কোন প্রার্থীর বিরুদ্ধে করলে সেটা বিপজ্জনক । কারণ মানুষ তখন প্রতিনিধির দিকেই আঙুল তুলবে, রানিং মেটের দিকে না। রাজনৈতিক ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বা রানিংমেট, দুই পক্ষকে পরিহার করতে হবে।

এদিকে ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার পর ক্ষুদ্ধ হয়ে মিশিগানে বিক্ষোভ র‌্যালি করেছে তার সমর্থকরা। এসময়, কেবল ট্রাম্প নয়, দেশের সাধারণ মানুষের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিও জানান বিক্ষোভকারীরা।

এফএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর