ঘণ্টায় প্রায় ২৩৪ কিলোমিটার বেগে চীনের হাইনান প্রদেশে আঘাত হেনেছে সুপার টাইফুন ইয়াগি। শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার কিছু পরে চীনের দক্ষিণাঞ্চলে শুরু হয় ঝড়ের তাণ্ডব। ঝড়ো হাওয়ার কারণে গাছ ও বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে পড়ায় বন্ধ আছে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন উপকূলীয় এলাকার অন্তত সাড়ে ৮ লাখ বাসিন্দা।
নিউজ এজেন্সি সিংহুয়ার প্রতিবেদন বলছে, বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল করতে কাজ শুরু করেছে জরুরি বিভাগের সাত হাজার সদস্য। এরই মধ্যে দুই লাখ বসতবাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনর্স্থাপন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
বিমানের ফ্লাইট বাতিল ও নৌ পথে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করায় চীনের হাওয়াই দ্বীপ খ্যাত হাইনান প্রদেশে আটকা পড়েছেন অসংখ্য পর্যটক। ভাটা পড়েছে হোটেল ও স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। উপকূলীয় এই দ্বীপ অঞ্চলে বসবাসরত অন্তত এক কোটি বাসিন্দাকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছে আবহাওয়া দপ্তর।
ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে হংকং, ম্যাকাও ও গুয়াংডং প্রদেশেও বন্ধ রাখা হয়েছে স্কুল-কলেজ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বিমান-রেল ও নৌ পরিষেবা। শুক্রবার রাতে হাইনানের পর টাইফুনটি ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে গুয়াংডং প্রদেশে। ইয়াগির আগাম পূর্বাভাস থাকায় প্রদেশটির প্রায় ছয় লাখ বাসিন্দাকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়। এদের দুই তৃতীয়াংশই ঝানজিয়াংয়ের বাসিন্দা।
সুপার টাইফুন ইয়াগি চলতি বছর এশিয়া মহাদেশে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়। ২০২৪ সালে হ্যারিকেন বেরিলের পর ইয়াগিকে বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শক্তিধর গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় ঝড় হিসেবে উল্লেখ করছে চীনের আবহাওয়া দপ্তর। বলা হচ্ছে, টাইফুন ইয়াগি ২০১৪ সাল আঘাত হানা টাইফুন 'রাম্মাসুন' এর চেয়েও অনেক বেশি শক্তিশালী। ওই সময়ে এই ঝড়ের প্রভাবে দেশটিতে ৮৮ জনের মৃত্যু হয়।
গেল সপ্তাহে প্রলয়ংকরী এই ঝড়ের প্রভাব দেখেছে ফিলিপিন্স। ঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট বন্য ও ভূমিধসে দেশটিতে ১৬ জনের প্রাণ হারায়। এছাড়া, শুক্রবার চীনের আঘার হানার আগে ইয়াগির কবলে পড়ে হংকং। চীন ছাড়াও টাইফুন ইয়াগি'র ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলাইয় সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার আরেক দেশ ভিয়েতনাম। শুক্রবার দিবাগত রাতে ঝড়টি আঘাত হানতে পারে এমন আশঙ্কায় কয়েক হাজার বাসিন্দাকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। ভিয়েতনাম বিমানবন্দরেও বন্ধ আছে বিমান চলাচল।