কলকাতার আর জি কর কাণ্ডে দোষীদের শাস্তির দাবিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। কর্মসূচির মধ্যে এবার কলকাতা পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ দাবিও জানিয়েছেন তারা। এরমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরজি করের সাবেক প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষকে।
এতদিন থেমে থেমে বিক্ষোভের ডাক দিলেও এবার বিরতিহীন বিক্ষোভে নেমেছেন কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকরা। গতকাল (সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর) লালবাজার অভিমুখে বিক্ষোভের ঘোষণাতেই রাস্তার ওপর বিশাল ব্যারিকেড বসিয়েছে পুলিশ।
লালবাজারে যেতে না পেরে বউবাজারে রাতভর অবস্থান নিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। ক্ষুদ্ধ হয়ে হাতে লাল গোলাপ আর মানুষের কঙ্কালের রেপ্লিকা নিয়ে কলকাতা পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন।
গানে, স্লোগানে জানিয়েছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পদত্যাগ আর ইন্টার্ন চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যায় দোষীদের বিচারের দাবি। যদিও পুলিশ বলছে, সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে তাদের। অথচ সকাল থেকে লালবাজারে পুলিশের প্রধান কার্যালয়ের সামনে জুনিয়র চিকিৎসকরা জড়ো হলেও বিশাল ব্যারিকেড দিয়ে তাদের গতিরোধ করে রাখা হয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একজন জানান, কলকাতা পুলিশ ব্যর্থ, তদন্তেও ব্যর্থ, আমাদের নিরাপত্তা দিতেও ব্যর্থ। যে কারণে শুধু ডাক্তার না সাধারণ মানুষও পথে নেমেছে। আমরা ন্যয়বিচার চাই।
উত্তাল এই পরিস্থিতির মধ্যে আর জি কর হাসপাতালের আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলায় অভিযুক্ত সাবেক প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই। তার সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও তিন সহযোগীকে। এদের মধ্যে দুজন হাসপাতালে ওষুধ সরবরাহ করতো, আরেকজন নিরাপত্তা রক্ষীর কাজ করতো।
৯ আগস্ট আর জি করে ইন্টার্ন চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যার পর থেকেই সেসময় দায়িত্বে থাকা সন্দীপ ঘোষের নামে অনেক অভিযোগ ওঠে। তার গ্রেপ্তারে সন্তোষ প্রকাশ করেছে বিজেপি। যদিও এতদিন পর কেন তাকে গ্রেপ্তার করা হলো, মমতাকে এর জবাব দিতে হবে বলে জানিয়েছে সিপিএম।
এদিকে ৯ আগস্ট নির্মম সেই হত্যাকাণ্ডের পর ১৪ আগস্ট হাসপাতাল প্রাঙ্গণে সহিংসতার ইন্ধনদাতা রাজ্যের গভর্নর সিভি আনন্দ বোসকেও গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।
বিজেপি নেতা মনোজ তিগ্গা বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ব্যর্থ, তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী, পুলিশও তার নিয়ন্ত্রণে। তাহলে কার কাছে তিনি উত্তর চাইছেন? আমরা উত্তর চাইছি যে মেয়েটাকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হলো তার পক্ষে। আমরা শান্তিপূর্ণ র্যালি করতে চাইছি। কিন্তু পুলিশের ব্যবহার খুব খারাপ। তারা টিয়ার গ্যাস, জলকামান নিয়ে হামলা করছে।’
চিকিৎসকসহ নাগরিক সমাজ ও নানা সংগঠনের তোপের মুখে অবশেষে আজ বিধানসভায় উত্থাপিত হয়েছে অপরাজিতা বিল ২০২৪। এই বিল নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি বিধানসভায় চলছে তর্কবিতর্ক।