এশিয়া
বিদেশে এখন
0

হত্যা রহস্যের এখনো সুরাহা করতে পারেনি সিবিআই

কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে নারী চিকিৎসক হত্যা রহস্যের এখনো সুরাহা করতে পারেননি সিবিআই কর্মকর্তারা। চতুর্থ দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে সাবেক অধ্যক্ষ সন্দ্বীপ ঘোষকে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে গ্রেপ্তার সঞ্জয় রায়েরও। কর্মবিরতির পথে না হেটে দিল্লির চিকিৎসকেরা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সামনের রাস্তায় চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে, নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে থেকে ন্যায় বিচারের আশা ছেড়ে দিয়েছে নিহতের পরিবার।

গেল ৯ আগস্ট কলকাতার আরজি কর হাসপাতালের চতুর্থ তলার সেমিনার হল থেকে উদ্ধার করা হয় ইন্টার্ন নারী চিকিৎসকের মরদেহ। প্রথমদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একে আত্মহত্যার ঘটনা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলেও, তীব্র আন্দোলনের মুখে ধর্ষণ ও হত্যা মামলা দায়েরের পর শুরু হয় তদন্ত কাজ। পুলিশের কাছ থেকে মামলা হস্তান্তর হয় ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই এর কাছে। তবে, হত্যাকাণ্ডের ১০ দিন পেরিয়েও গেলেওম, এখনও কোন কূল কিনারা করতে পারেননি সিবিআই কর্মকর্তারা।

হাসপাতালের কোথায় ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। সন্দেহের তীর কলকাতা পুলিশের দিকেও। মরদেহের ময়নাতদন্ত নিয়ে তাড়াহুড়ো করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সিবিআই-এর ধারণা, হত্যাকাণ্ডে একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে। এছাড়াও, অপরাধ সংগঠনের জায়গা সম্পর্কেও নিশ্চিত নন তারা। হাসপাতালের জরুরি বিভাগসহ তিন তলা পর্যন্ত থ্রিডি স্ক্যানার দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হচ্ছে।

এদিকে চতুর্থ বারের মতো আরজি কর হাসপাতালের সাবেক অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই। তদন্ত কর্মকর্তাদের বক্তব্য, ঘটনার দিন সন্দীপের ফোনের কল রেকর্ড, নাম ও নম্বর মুছে ফেলা হয়েছে। তার মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার ফরসেনিক পরীক্ষা করা হচ্ছে। ভিকটিম কোনো চক্রান্তের শিকার হয়েছিলেন কি না, তাও খতিয়ে দেখছে সিবিআই।

এদিকে, এ হত্যাকাণ্ডের জেরে গেল ১২ আগস্ট থেকে ভারতজুড়ে কর্মবিরতি পালন করছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। বন্ধ আছে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা। তবে, এবার কর্মবিরতির পথে না হেঁটে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সামনের রাস্তায় সেবা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দিল্লির অল ইন্ডিয়া মেডিকেলের চিকিৎসকেরা। প্রায় ৩৬টি বুথে বহির্বিভাগে রোগীদের সেবা দিচ্ছেন তারা।

চলমান পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া সদস্য সংগ্রহ অভিযান স্থগিত করেছে জেপি। রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিজেপির সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী ছয় বছর পর পর দেশজুড়ে দলের সদস্য সংগ্রহ করা হয়।

তবে, চাপ বাড়ছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর। ন্যায়বিচারের জন্য মমতার ওপর আর ভরসা রাখতে পারছেন না বলে জানিয়েছে নিহতের পরিবার। তাদের অভিযোগ, রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকার পরও তিনি যথাযথ উদ্যোগ নেননি। সাধারণ মানুষ তাদের হয়ে লড়াই করছে।

হাসপাতালে ভাঙচুর ও আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩৭ জনকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে আরও দুই চিকিৎসককে নোটিশ দিয়েছে কলকাতা পুলিশ।

tech