এশিয়া
বিদেশে এখন
0

ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সংস্কারপন্থী মাসুদ পেজেশকিয়ানের জয়

প্রতিদ্বন্দ্বী সাঈদ জালিলিকে সাড়ে ২৮ লাখ ভোটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে ইরানের নবম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন মাসুদ পেজেশকিয়ান। ইসলামী বিপ্লবের পর চতুর্থবারের মতো সংস্কারপন্থী প্রেসিডেন্ট পেলো দেশটি। পাঁচবারের এই আইনপ্রণেতার প্রতিশ্রুতি ছিল পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের। যদিও দ্বৈত শাসন ব্যবস্থার ইরানে পেজেশকিয়ান কতটুকু সংস্কার আনতে পারবেন, তা নিয়ে সন্দিহান আছেন বিশ্লেষকরা।

মাসুদ পেজেশকিয়ান ডার্ক হর্স থেকে হয়ে উঠেছেন নায়ক। ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে চার প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে লো প্রোফাইলের ছিলেন পাঁচবারের এই আইনপ্রণেতা। কারণ রক্ষণশীল ইরানে তিনিই ছিলেন একমাত্র সংস্কারপন্থী। তবে দুই পর্বের ভোটগ্রহণে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেশটির নবম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন মাসুদ পেজেশকিয়ান।

গতকাল (শুক্রবার, ৫ জুলাই) অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা ভোটে ৫৩.৩ শতাংশ ভোট পেয়ে জয় পেলেন ৬৯ বছর বয়সী এই নেতা। এতে করে ইসলামী বিপ্লবের পর চতুর্থবারের মতো সংস্কারপন্থী কোনো প্রেসিডেন্ট বসতে যাচ্ছেন ইরানের মসনদে। প্রতিদ্বন্দ্বী রক্ষণশীল সাঈদ জালিলির সঙ্গে পেজেশকিয়ানের ভোটের ব্যবধান ছিল সাড়ে ২৮ লাখ।

নির্বাচনের সময় মাসুদের প্রতিশ্রুতি ছিল অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের। আগ্রহ দেখিয়েছিলেন পরমাণু ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপে বসার। বিশ্লেষকদের ধারণা, রক্ষণশীল সমাজে পরিবর্তনের হাওয়ায় জয় পেয়েছেন সংস্কারপন্থী এই প্রার্থী।

১৯৫৪ সালে উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় মাহাবাদ অঞ্চলের সংখ্যালঘু আজেরি সম্প্রদায়ের পরিবারে জন্ম নেন পেজেশকিয়ান। তরুণ বয়সে অংশ নেন ইরাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধে। পেশাগত জীবনে মাসুদ একজন হার্ট সার্জন, দায়িত্ব সামলেছেন তাবরিজ ইউনিভার্সিটি অফ মেডিকেল সায়েন্সের প্রধান হিসেবে। ১৯৯৭ সালে উপ-স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে রাজনীতিতে তার আগমন। পরবর্তীতে দায়িত্ব সামলেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর। পাঁচবারের নির্বাচিত এই আইনপ্রণেতা নীতি পুলিশের কট্টর সমালোচক। মাহসা আমিনীর মৃত্যুর বিষয়ে জবাবদিহিতা চেয়েও আলোচিত হন তিনি।

ইরানের দ্বৈত শাসন ব্যবস্থায় ক্ষমতা কেন্দ্রভূত রয়েছে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনির হাতে। তাই পররাষ্ট্রনীতি ও অভ্যন্তীরণ শাসন ব্যবস্থায় পেজেশকিয়ান কতটুকু সংস্কার আনতে পারবেন, তা নিয়ে সন্দিহান রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

শুক্রবার অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির হার ছিল ৪৯ শতাংশ। ভোটার সংখ্যা বাড়াতে নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পরেও মধ্যরাত পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ । গেল ১৯ মে হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে নিহত হন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। তার উত্তরসূরি খুঁজতে ২৮ জুন চলে প্রথম দফার নির্বাচন। তবে কেউই ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় প্রধান দুই প্রার্থীকে নিয়ে নির্বাচন গড়ায় দ্বিতীয় ধাপে।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর