এশিয়া
বিদেশে এখন
0

অনিশ্চয়তায় দেশ ছাড়ছেন মিয়ানমারের তরুণরা

মিয়ানমারে বাধ্যতামূলক সেনাবাহিনীতে নিয়োগের ঘোষণার পর থেকে অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছেন তরুণরা। চাকরি, ব্যবসা এমনকি দেশও ছেড়ে দিচ্ছেন অনেকে। যারা আছেন তারাও গ্রেপ্তার হতে পারেন যেকোনো সময়। অন্যদিকে সেনাসদস্য কমার পাশাপাশি সীমান্ত এলাকাগুলোতে নিজেদের অবস্থান হারিয়ে বিপাকে পড়ছে খোদ জান্তা সরকার।

তরুণদের মতে, বাধ্যতামূলক সেনাবাহিনীতে নিয়োগ মানেই মৃত্যু। কারণ জান্তা সরকার তাদের ব্যবহার করবে নিজেদের ঢাল হিসেবে।

চাকরি, ব্যবসা ছেড়ে দেশ ছাড়ছে এই তরুণরা। জান্তা সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, দেশের ৫ কোটি ৪০ লাখ মানুষের মধ্যে ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষই সেনাবাহিনীতে নিয়োগের উপযুক্ত। এই ঘোষণার পর থেকে হাজার হাজার তরুণ ইয়াঙ্গুনের থাই দূতাবাসে ভিড় করছেন, অনেকে যাচ্ছেন মান্দালয় পাসপোর্ট অফিসে, ভিসা আর ভ্রমণের কাগজপত্রের জন্য।

সাবেক সেনা কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২১ সালের সেনা অভ্যুত্থানের পর যে তরুণরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাননি, এখন তাদের যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করা হতে পারে। তারা সব ধরনের স্বাধীনতা, শিক্ষা আর কর্মসংস্থান হারাচ্ছেন। তরুণদের মতে, জান্তা সরকারকে কোনোভাবেই বিশ্বাস করা যায় না।

একদিকে সাধারণ মানুষের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে জান্তা সরকার। অন্যদিকে সীমান্ত এলাকাগুলোতে নিজেরাই চাপের মুখে পড়েছে। থাইল্যান্ডের গুরুত্বপূর্ণ একটি সীমান্তে শতাধিক সেনা আত্নসমর্পন করে সেখান থেকে সেনা সরিয়ে নিয়েছে জান্তা সরকার। কারেন রাজ্যের মিয়াওয়াদির নিয়ন্ত্রণ হারাতে বসেছে জান্তা। মিয়ানমার থেকে থাইল্যান্ডে পণ্য পরিবহনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই সীমান্ত। দশকের পর দশক ধরে এটি নিয়ন্ত্রণ করে আসছে সেনাবাহিনী। থাই প্রধানমন্ত্রী বলছেন, জান্তা সরকার দুর্বল হচ্ছে। কিন্তু তাদের ক্ষমতা আছে, অস্ত্র আছে।

এর আগে চীন ও ভারত সীমান্তের অনেক এলাকা হাতছাড়া হয়েছে জান্তা সরকারের। পাশাপাশি পশ্চিম রাখাইন রাজ্যের অনেক এলাকা চলে গেছে বিদ্রোহীদের দখলে। বিদ্রোহীরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে শত শত সেনা মিয়াওয়াদিতে আত্নসমর্পন করেছে, এই সেনাদের জন্য থাই সরকারের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে জান্তা সরকার।

২০২১ সালে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেত্রী অং সান সুচিকে জোর করে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে মিয়ানমারে ক্ষমতায় আসে জান্তা সরকার। এই সেনা সরকারের বিরোধিতা করে সে সময় অস্ত্র হাতে তুলে নেয় অনেক বিদ্রোহী গোষ্ঠী। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে জাতিগত বিভিন্ন গোষ্ঠীর কাছে অবস্থান হারাচ্ছে জান্তা বাহিনী। জান্তা সরকার এখন পড়ে গেছে চরম সেনা সংকটে। সাবেক সেনা কর্মকর্তারা বলছেন, জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং এখন যেকোনো কিছুই করতে পারে।

এসএস