যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের ক্ষেত্রে বিশ্বের ৯০ শতাংশ বাজার ধরে রেখেছে ৫টি প্রতিষ্ঠান। তবে এদের মধ্যে শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং ও ফ্রান্সের এয়ারবাস। গেল বছর প্রতিষ্ঠান দু'টি অর্ডার পেয়েছে প্রায় ৪ হাজার উড়োজাহাজ বিক্রির। এবার বোয়িং ও এয়ারবাসের আধিপত্য ভাঙতে ঘটা করে মাঠে নেমেছে চীন। সম্প্রতি সিঙ্গাপুর এয়ারশোতে অংশ নিয়েছে কমার্শিয়াল এয়ারক্রাফট করপোরেশন অব চায়না (কোম্যাক) এর যাত্রীবাহী বিমান সি-৯১৯।
২০১৫ সালে তৈরি করা হলেও উড়োজাহাজটি প্রথমবারের মতো উড্ডয়ন করে ২০১৭ সালে। এরও ৫ বছর পর দেশটির নিরাপত্তা সনদ পায় সি-৯১৯। বর্তমানে চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্সের অধীনে কোম্যাক এর ৪টি বিমান যাত্রী পরিবহন করছে। এতোদিন চীনের অভ্যন্তরে যাত্রী পরিবহন করলেও সিঙ্গাপুর এয়ারশো'র কারণে প্রথমবারের মতো বিমানটি যাত্রা করলো দেশের বাইরে।
এশিয়ার সবচেয়ে বড় এয়ারশো'র সাইডলাইনে তিব্বত এয়ারলাইন্সের সঙ্গে ৫০টি যাত্রীবাহী বিমান বিক্রির চুক্তি স্বাক্ষর করে কোম্যাক। এয়ারবাসের এ-৩২০ নিও ও বোয়িংয়ের ৭৩৭ ম্যাক্স এর নকশার আদলে তৈরি করা হলেও সি-৯১৯ তুলনামূলকভাবে বেশি যাত্রী ও বেশি দুরত্ব অতিক্রমে সক্ষম। একটানা ৬ ঘণ্টা উড়তে পারার কারণে এয়ারশো'র আকর্ষণ ছিল চীনের এই উড়োজাহাজের ওপর। প্রথমবারের মতো সিঙ্গাপুরে চীনের কোনো উড়োজাহাজ নির্মাতার আগমনে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
সিঙ্গাপুর ইকোনোমিক ডেভলপমেন্ট বোর্ডের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সিন্ডি কোহ বলেন, 'প্রথমবারের মতো চীন থেকে প্রদর্শকরা আসছেন। সিঙ্গাপুরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণে এটি খুবই ইতিবাচক ও উৎসাহব্যঞ্জক চিহ্ন।'
এয়ারক্রাফ্ট তৈরি বেশ ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেক দেশই উড়োজাহাজ তৈরির ব্যবসায় আসতে চায় না। তবে চ্যালেঞ্জকে জয়ের জন্য আটঘাট বেঁধে নেমেছে চীন। রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থা কোম্যাক সি-৯১৯ এর ডেভলপমেন্ট ও ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে বিনিয়োগ করেছে প্রায় ৫ হাজার কোটি ডলার। বোয়িং এর কারিগরি ক্রটি ও এয়ারবাসের উৎপাদন জটিলতায় অনেক দেশই খুঁজছে বিকল্প এয়ারক্রাফট নির্মাতাদের।
এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর ছাড়পত্র পেলেই অ্যাভিয়েশন খাতে চীনের কোম্যাক সাফল্য দেখাবে বলে আশা বিশেষজ্ঞদের।