ভ্রমণ , এশিয়া
বিদেশে এখন
0

কিভাবে পরিবেশবান্ধব উপায়ে মশা নিয়ন্ত্রণ হয়েছে!

পরিবেশবান্ধব উপায়ে সোনেভা ফুশি রিসোর্ট দ্বীপের প্রায় ৯৮ শতাংশ মশা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়েছে।

যে কোনো উৎসব বা ভ্রমণের আনন্দকে নিমিষেই ম্লান করে দিতে পারে মশাবাহিত যে কোনো অসুখ। তাই তো কোথাও ভ্রমণ বা অবকাশ যাপনে মশার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে আমাদের থাকে নানা রকম প্রস্তুতি। বিশেষ করে দ্বীপে ঘুরতে গিয়ে মশার উপদ্রবে বেশ বিরক্ত হন পর্যটকরা।

তবে যদি এমন কোথাও বেড়াতে যান যেখানে নেই মশার উৎপাত তাহলে কেমন হবে? শুনতে একটু অবিশ্বাস্য হলেও মালদ্বীপের ব্যক্তিগত দ্বীপ কুনফুনাধু তেমনই মশাবিহীন।

কুনফুনাধু দ্বীপে গড়ে উঠেছে অনন্য সুন্দর এক রিসোর্ট সোনেভা ফুশি। আনন্দ বিনোদনের পাশাপাশি পর্যটকদের স্বাস্থ্যের বিষয়টি মাথায় রেখে, কয়েক বছর ধরে কীটপতঙ্গ নির্মূলে কাজ করছে রিসোর্টটি।

প্রায়ই দেখা যায়, দ্বীপে ঘুরতে গিয়ে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু এবং জিকার মতো মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হন পর্যটকরা। এতে দ্বীপের পর্যটন খাতেও বেশ নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। আর তাই পর্যটকদের সমুদ্রবিলাসে মশা যেনো বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সে লক্ষ্যে রিসোর্টটি জার্মানভিত্তিক সংস্থা বায়োজেন্টসের সাথে অংশীদারিত্ব করে মশা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।

রিসোর্টটির সামাজিক ও পরিবেশ সচেতনতা বিষয়ক পরিচালক আরনফিন ওইনস জানান, দ্বীপটিতে দীর্ঘদিন ধরেই মশার বেশ উপদ্রব করে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এই উপদ্রব আরও বেড়ে যায়। তাই কোনো রাসায়নিক ব্যবহার ছাড়াই মশা নিয়ন্ত্রণের উপায় খুঁজছিলো কর্তৃপক্ষ। অবশেষে পরিবেশবান্ধব উপায়েই মশা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়েছে তারা।

২০১৯ সালে প্রথম বায়োজেন্টস সিস্টেম ব্যবহার করে রিসোর্টটি। এতে ২টি ভিন্ন ধরনের ৫০০টিরও বেশি ফাঁদ দ্বীপের চারপাশে স্থাপন করা হয়। প্রথম প্রকার ফাঁদটি বিজি-গ্যাট নামে পরিচিত। এটি একটি প্যাসিভ ফাঁদ, যা ইতোমধ্যেই কাউকে কামড়েছে এবং ডিম পাড়ার জায়গা খুঁজছে এমন মশাদের আটকাতে সক্ষম।

আর দ্বিতীয়টি হলো বিজি-মসকিউটার কার্বন ডাই অক্সাইড, যা রক্তের সন্ধান করছে এমন মশাদের ফাঁদে আটকাতে সাহায্য করে। এই ফাঁদটি চিনির গাঁজন দ্বারা তৈরি। এছাড়া মানুষের ত্বকের অনুকরণে এতে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং ল্যাকটিক এসিডও ব্যবহার করা হয়। যাতে মশারা সহজেই আকৃষ্ট হয়ে ফাঁদে আটকায়। মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ফাঁদ দুটি হাজার হাজার মশা ধরতে সক্ষম হয়।

রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, ফাঁদ পাতার পাশাপাশি, মশার বাস্তুবিদ্যার উপর তাদের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে তারা। যার ফলও পাওয়া গেছে হাতে নাতে। প্রথম বছরেই দ্বীপের মশা প্রায় ৯৮ শতাংশ কমেছে। আর এ কারণ, সোনেভা ফুশি মালদ্বীপের প্রথম মশা মুক্ত রিসোর্টের খেতাবও কুড়িয়েছে।

তবে মশা নিয়ন্ত্রণ হলেও কিছুটা বিপাকে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ। কারণ, মশা নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে ফাঁদে আটকা পড়ে প্রজাপতি, ড্রাগনফ্লাই, বাম্বলবি এবং বিটলসের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।

এসএস

আরও পড়ুন: