ইসরাইলের রাফাহ সীমান্ত আংশিক খুলে দেয়ার পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান মুসলিম দেশগুলোর

রাফাহ সীমান্ত
রাফাহ সীমান্ত | ছবি: সংগৃহীত
0

রাফাহ সীমান্ত আংশিক খুলে দেয়ার বিষয়ে ইসরাইলি পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে আরব ও মুসলিম দেশগুলো। এছাড়া প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতিতে ইসরাইল ৬শ’ বার শর্ত লঙ্ঘন করে হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত রাখায় দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি প্রচেষ্টা নিয়ে শঙ্কিত গাজাবাসী। ফিলিস্তিনিদের নিরাপত্তার প্রশ্নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনা প্রতিনিধি। এমন সংকটের মধ্যে গাজা ছাড়াও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের উপর জোর দিয়ে শনিবার কাতারে শুরু হয়েছে ২৩তম দোহা ফোরাম।

হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত রেখে ১০ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় অন্তত ৬শ'বার যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করেছে ইসরাইল। প্রথম ধাপে চলমান হামলার মধ্যেই যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ শুরুর পরিকল্পনা চলছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তা বাস্তবায়নের পরিকল্পনাও রয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনের। এ অবস্থায় শান্তি চুক্তির কার্যকারিতা নিয়ে শঙ্কা-উদ্বেগের পাল্লা ভারী হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের মাঝে।

ফিলিস্তিনিরা বলেন, ‘মধ্যস্থতাকারীরা কোথায়? যারা যুদ্ধবিরতি চেয়েছিলেন তারা কোথায়? আমরা কোনো যুদ্ধবিরতি দেখতে পাচ্ছি না। গাজায় আমরা শান্তি দেখতে পাচ্ছি না। প্রতিদিন হত্যা, বোমাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে।’

এমন পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য ইরান নয়; ইসরাইল বড় হুমকি বলে মন্তব্য করেছেন সৌদি আরবের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান প্রিন্স তুর্কি আল ফয়সাল। ফিলিস্তিনের নিরাপত্তার প্রশ্নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একসাথে কাজ করার জন্য শুক্রবার আহ্বানও জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনা প্রতিনিধি। এদিন সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে ফিলিস্তিন এবং মধ্যপ্রাচ্য সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। যা জাতিসংঘের বিশেষ রাজনৈতিক ও উপনিবেশ মুক্তকরণ কমিটি দ্বারা সুপারিশ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:

জাতিসংঘের চীনা প্রতিনিধি সান লেই বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুর মূলে রয়েছে ফিলিস্তিন। যা আন্তর্জাতিক ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচারের বিষয়। এটি আঞ্চলিক পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। এর জন্য গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মানবিক পরিস্থিতির উন্নতির আহ্বান জানাচ্ছি। ফিলিস্তিনি শাসনের নীতি অনুসরণ করে সংঘাত-পরবর্তী শাসনব্যবস্থা এবং পুনর্গঠনের উপর জোর দেয়া উচিত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আমরা দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান প্রচেষ্টায় জোর দেবো।’

এদিকে ফিলিস্তিনিদের দেশ ছেড়ে যাওয়ার সুযোগ দিতে মিশরের সাথে থাকা রাফাহ সীমান্ত একমুখী খুলে দিতে চায় ইসরাইল। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে শনিবার যৌথ বিবৃতি দিয়েছে মিশর, ইন্দোনেশিয়া, জর্ডান, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব, তুরস্ক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। এমনকি ইসরাইলের এ পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যানও করেছে আরব ও মুসলিম দেশগুলো।

পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনা মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে। যেখানে গাজার জনগণের চলাচলের স্বাধীনতা নিশ্চিতে রাফাহ ক্রসিং উভয় দিকেই খোলা রাখা প্রয়োজন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

এমন অস্থিরতার মধ্যে শনিবার কাতারে শুরু হয়েছে ২৩তম দোহা ফোরাম। যেখানে বিশ্বনেতা, উচ্চ পর্যায়ের কূটনীতিক এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলোচনায় গাজা ছাড়াও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের উপর জোর দেয়া হচ্ছে। বিশ্বের ১৫০টি দেশের আমন্ত্রিত ৬ হাজার অতিথির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন মাইক্রোসফটের সহ প্রতিষ্ঠাতা ও ধনকুবের বিল গেটস।

এছাড়াও ইইউ-এর পররাষ্ট্র নীতি প্রধান কাজা কালাস, স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসে ম্যানুয়েল আলবারেস এবং তুরস্কের শীর্ষ কূটনীতিক হাকান ফিদানসহ আরও অনেকে।

ইএ