শিগগিরই শুরু হবে গাজা শান্তি পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপ, দাবি ট্রাম্পের

গাজায় ইসরাইলের হামলায় ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি স্থানের ছবি
গাজায় ইসরাইলের হামলায় ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি স্থানের ছবি | ছবি: সংগৃহীত
0

খুব শিগগিরই শুরু হবে গাজা শান্তি পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়নের কাজ। অবরুদ্ধ উপত্যকায় ইসরাইলের প্রাণঘাতী হামলা অব্যাহত থাকার মধ্যেই এমন দাবি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ভঙ্গুর অস্ত্রবিরতির মধ্যেই দখলদার দেশটির হামলায় গত (বুধবার, ৩ ডিসেম্বর) প্রাণ যায় দুই শিশুসহ কমপক্ষে আরও সাতজন বেসামরিক ফিলিস্তিনির। অন্যদিকে, রাফাহ সীমান্ত খুলে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে ইসরাইল, তবে তা শুধুই ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে বের হতে দেয়ার জন্য।

দুই বছরে বারবার আশ্রয়হীন গাজার খান ইউনিসের এ তাঁবুবাসীদের যেন মুক্তি নেই। বুধবার সন্ধ্যায় ইসরাইলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মাথার ওপর শেষ আশ্রয়ও হারান শরণার্থীরা, প্রাণ যায় অনেকের।

হামাসের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে এ হামলা চালায় ইসরাইল। যদিও বরাবরের মতোই নেই দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ বা বিস্তারিত তথ্য। বলা হচ্ছে, একইদিন রাফায় ইসরাইলি সেনাদের ওপর হামলার জবাব দিতে এ অভিযান। অবশ্য একই সঙ্গে প্রায় দেড় বছর পর মিশর সীমান্তবর্তী রাফাহ ক্রসিং খুলে দেয়ারও ঘোষণা দিয়েছে দখলদার দেশটির। অবশ্য সীমান্ত খুললেও এর কার্যকারিতা সীমিত শুধুমাত্র গাজা ছাড়াতেই; গাজায় ফেরা বা ত্রাণ প্রবেশের পথ থাকছে বন্ধই।

এদিকে, প্রায় দুই মাসের ভঙ্গুর অস্ত্রবিরতির মধ্যেই অবরুদ্ধ উপত্যকায় ইসরাইলের বিরামহীন হামলা। গাজার কর্তৃপক্ষের তথ্য, যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর থেকে অন্তত ৫৯১ বার তা লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল, হতাহত হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। অবশ্য তাও অস্ত্রবিরতি কার্যকর আছে বলেই দাবি করে যাচ্ছে ইসরাইলের ঘনিষ্ঠতম মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি খুব শিগগিরই শুরু হবে গাজা শান্তি পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়নের কাজ, এমন দাবিও করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আরও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘খুবই ভালো এগোচ্ছে । কিছু সমস্যা হচ্ছে। একটা বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে। অনেকেই গুরুতর আহতও হয়েছে। অনেকে মারাও গেছে সম্ভবত। যা ঘটেছে মাত্রই জেনেছি। কিন্তু ভালোই যাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি দেখছি আমরা। মানুষ এটা উপলব্ধি করে না। যদিও সমর্থনও মিলছে অনেক। ৫৯টি দেশ আমাদের সাথে আছে। দ্বিতীয় ধাপ নিয়েও কাজ করছি আমরা। খুব শিগগিরই এটি ঘটতে দেখবো আমরা।’

অস্ত্রবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপে গাজায় আটক ইসরাইলি জিম্মি ও ইসরাইলি কারাগারগুলোতে আটক ফিলিস্তিনিদের বন্দিবিনিময়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে সুষ্ঠুভাবেই। তবে যুদ্ধপরবর্তী গাজা পুনর্গঠন ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী শাসকগোষ্ঠী হামাসকে বাদ দিয়ে উপত্যকার শাসনব্যবস্থার প্রশ্নে হুমকির মুখে শান্তি পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপ। এমন পরিস্থিতিতে, শুরু থেকেই গাজায় ইসরাইলের সামরিক অভিযান ভুল সিদ্ধান্ত এবং যুদ্ধাপরাধ, মন্তব্য জাতিসংঘ মহাসচিবের।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘এ অভিযানে গাজাবাসিদের মৃত্যু এবং গাজা ধ্বংসের পরিকল্পনা পুরোপুরি অগ্রাহ্য করা হয়েছে। এ অভিযানের লক্ষ্য ছিল হামাসকে ধ্বংস করা। গাজা ধ্বংস হয়ে গেছে, কিন্তু হামাস এখনো ধ্বংস হয়নি। তাই এ সামরিক অভিযান পরিচালনা মৌলিকভাবে একটি ভুল সিদ্ধান্ত।’

অন্যদিকে, এক ইসরাইলি পুলিশ কর্মকর্তা ও থাই নাগরিকসহ দুই জিম্মির মরদেহ রেড ক্রসের কাছে হস্তান্তর করেছে হামাস ও ইসলামিক জিহাদ।

এফএস