কর্মী সংকটে ভারতজুড়ে ইন্ডিগোর শত শত ফ্লাইট বাতিল, বিমানবন্দরে বিশৃঙ্খলা

ইন্ডিগোর ফ্লাইট
ইন্ডিগোর ফ্লাইট | ছবি: এখন টিভি
0

কর্মী সংকটে গেল তিন দিনে ভারতজুড়ে বাতিল হয়েছে বিমান সংস্থা ইন্ডিগোর কয়েকশো ফ্লাইট। এর জেরে দিল্লি, মুম্বাই, হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরুসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরগুলোতে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। সংস্থাটির কাছে চরম অব্যবস্থার কারণ জানতে চেয়েছে ভারতের বিমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এ ঘটনায় এরইমধ্যে যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে দেশটির সবচেয়ে বড় বিমান সংস্থা ইন্ডিগো। চলমান সমস্যা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে সংস্থাটি।

ভারতের সবচেয়ে বড় বিমান সংস্থা ইন্ডিগো প্রতিদিন ২ হাজার ২০০ এর বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করে। যা এশিয়ার বৃহত্তম বিমান নেটওয়ার্কগুলোর একটি। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রাতের ফ্লাইট পরিচালনায় তাদের সুনাম রয়েছে। সম্প্রতি এ বিমান সংস্থাটি ফ্লাইট পরিচালনায় গুরুতর সমস্যায় পড়েছে। গেল নভেম্বর মাসে বাতিল হয়েছে ইন্ডিগোর ১ হাজার ২৩২টি ফ্লাইট। এছাড়া, সময়সূচি পরিবর্তন হয়েছে কয়েক হাজার ফ্লাইটের।

বর্তমানে বিমান সংস্থাটির ফ্লাইট পরিচালনার হার নেমে এসেছে ৩৫ শতাংশে। টানা তিন ধরে বাতিল ও বিলম্বিত কয়েক হাজার ফ্লাইট। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। দিল্লি, মুম্বাই, হায়দ্রাবাদ, বেঙ্গালুরুসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরগুলোতে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। টার্মিনালে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও গন্তব্যে যেতে পারছেন না তারা। ফলে যাত্রীদের তোপের মুখে কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুন:

ফ্লাইট বিপর্যয়ের মূল কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে কর্মী সংকট। পাইলট ও কেবিন ক্রুদের সংশোধিত কাজের সময়সূচি নভেম্বরে কার্যকর হওয়ার পর থেকেই এ সমস্যা তীব্র হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, একজন কর্মীকে দিনে ৮ ঘণ্টা কাজ করার পাশাপাশি কমপক্ষে ১০ ঘণ্টা বিশ্রামের সুযোগ দেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। পাইলট ও কেবিন ক্রুদের ক্লান্তি দূর করে দুর্ঘটনা এড়াতেই এমন পদক্ষেপ। এছাড়া, রাতের ফ্লাইট ৬টি থেকে নামিয়ে আনা হয়েছে ২টিতে।

ইন্ডিগোর দাবি, নতুন কর্মঘণ্টায় দেখা দিয়েছে কর্মী সংকট। এছাড়া দেশের প্রধান বিমানবন্দরগুলোতে প্রযুক্তিগত ত্রুটি, বিমান উঠা-নামায় জট এবং শীতকালীন ও ছুটির মৌসুমে ফ্লাইটের চাপ সামলাতে চলমান এ বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতির জন্য এরইমধ্যে যাত্রীদের কাছে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চেয়ে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে সংস্থাটি।

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করলেও সে অনুযায়ী কর্মী নিয়োগ ও পরিচালনা কাঠামো ঠিক করতে পারেনি ইন্ডিগো।

ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান পাইলটস সভাপতি ক্যাপ্টেন সিএস রন্ধাওয়া বলেন, ‘ইন্ডিগোর পাইলটরা প্রায় ৫৫ থেকে ৫৭ ঘণ্টা ফ্লাইট পরিচালনায় ছিলেন। ১ নভেম্বরের পর, পাইলটদের ছুটিও বাতিল করতে চেয়েছিলো বিমান সংস্থাটি। পাইলটদের কাজের মধ্যে কোনো ধরনের ভারসাম্য ছিলো না। পাইলট এবং ক্রুদের তালিকাটি ছিলো সম্পূর্ণ অনুপযুক্ত। তারা বিমান পরিচালনায় সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেনি।’

এদিকে, চরম অব্যবস্থাপনার জেরে ইন্ডিগোর কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে ভারতের বিমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ। ঘটনা তদন্তে এরইমধ্যে বৈঠক ডেকেছে সংস্থাটি।

এফএস