ডিসেম্বরের মধ্যে বৃষ্টি না হলে তেহরান খালি করার সতর্কবার্তা ইরানের

মাসুদ পেজেশকিয়ান
মাসুদ পেজেশকিয়ান | ছবি: রয়টার্স
0

স্মরণকালের ভয়াবহ খরা ও অনাবৃষ্টিতে তীব্র পানির সংকটে ভুগছে ইরান। ডিসেম্বরের মধ্যে বৃষ্টি না হলে রাজধানী তেহরান খালি করার সতর্কবার্তা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। পানির উৎস শুকিয়ে যাওয়ায় দুর্বিষহ জীবন কাটছে তেহরানের ১ কোটির বেশি বাসিন্দার। ইরানের মোট পানি সরবরাহের ১৯টি জলাধারের প্রায় ১০ শতাংশ শুকিয়ে গেছে। এমন অবস্থায় কৃত্রিম বৃষ্টির মাধ্যমেও কাটছে না সংকট। তেহরানে আয়োজন করা হয়েছে বৃষ্টির জন্য বিশেষ প্রার্থনার।

কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ পানি সংকটের মুখে ইরান। রেকর্ড তাপমাত্রা ও বিদ্যুতের ঘাটতিতে গ্রীষ্মের পরও সংকট তীব্র হয়েছে। এছাড়া, দীর্ঘস্থায়ী খরার মধ্যে পানির অতিরিক্ত ব্যবহার, অদক্ষ সেচ ব্যবস্থা এবং পানি বণ্টনে অব্যবস্থাপনায় এই সমস্যা আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। দেশটির অর্ধেকের বেশি অংশে গেল কয়েক মাসে এক ফোঁটাও বৃষ্টি হয়নি।

গত এক শতাব্দীর মধ্যে রাজধানী তেহরানে বৃষ্টিপাত সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। পানির জন্য পুরোপুরিভাবে নির্ভরশীল শহরের বাইরের পাঁচটি জলাধারের স্তর নেমে গেছে ৪৩ শতাংশ। একসময় এসব জলাধারের পানি ধারণক্ষমতা ছিল ৫০ কোটি ঘনমিটার। এখন তা নেমে এসেছে অর্ধেকে। এমন অবস্থায় পানি সংরক্ষণে প্লাস্টিক ট্যাংকের বিক্রি বেড়েছে বহুগুণ।

আরও পড়ুন:

খাবার ও ব্যবহারের পানির তীব্র সংকটে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে ১ কোটি বাসিন্দার শহর তেহরান। ডিসেম্বরের মধ্যে বৃষ্টি না হলে রাজধানী খালি করতে হবে বলেও সতর্কবার্তা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট

ট্যাপে পানি নেই। তীব্র পানির সংকটে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে রাজধানীবাসীর মধ্যে। এই অব্যবস্থাপনার জন্য অনেকে সরকারকে দোষারোপ করছেন।

সংকট শুধু তেহরানেই নয়। ইরানের মোট পানি সরবরাহের ১৯টি জলাধারের প্রায় ১০ শতাংশ শুকিয়ে গেছে। ৪০ লাখ জনসংখ্যার ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মাশহাদে পানির মজুত নেমেছে ৩ শতাংশে। অনাবৃষ্টি ও খরায় শুকিয়ে গেছে দেশটির সবচেয়ে বড় উর্মিয়া লেক। এমন অবস্থায় কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েও সংকট সমাধান করতে পারছে না ইরান।

এদিকে, পানির সংকটে হাহাকার করছে ইরানের বাসিন্দারা। তাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। দুর্দশা কাটিয়ে উঠতে সৃষ্টিকর্তার কাছে বিশেষ প্রার্থনা করেছেন তেহরানবাসী। সালেহ মাজারে আয়োজিত বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নেয় শত শত ইরানি।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ইরানের বার্ষিক বৃষ্টিপাত হয়েছে মাত্র ১৫২ মিলিমিটার। যা গেল ৫৭ বছরের গড় বৃষ্টির চেয়ে ৪০ শতাংশ কম।

ইএ