ঘটনার সূত্রপাত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের ওভারসাইট কমিটির ডেমোক্র্যাট সদস্যদের মাধ্যমে। যৌন নিপীড়ন ও নারী পাচারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত জেফরি এপস্টেইন তার এক সহযোগী এবং এক লেখকের কাছে এমন কিছু ইমেইল পাঠান যেখানে একাধিকবার উল্লেখ করা হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের নাম। গেল বুধবার ঐ ইমেইলগুলোই প্রকাশ্যে আনেন ওভারসাইট কমিটির ডেমোক্র্যাট সদস্যরা।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, এপস্টেইনের সহযোগীর নাম গিসলেইন ম্যাক্সওয়েল, যিনি ছিলেন এপস্টেইনের প্রেমিকা আর ঐ লেখক মাইকেল ওলফ- ট্রাম্পের ঘনিষ্ট মিত্রদের একজন। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের দাবি, ম্যাক্সওয়েলই অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের যৌনকাজে সম্পৃক্ত করতেন। আর ইমেইলগুলো থেকে প্রমাণ হয়, ট্রাম্প নিজে মেয়েদের সম্পর্কে জানতেন। তবে ওভারসাইট কমিটির এই আচরণকে ট্রাম্পকে কলঙ্কিত করার অপচেষ্টা বলে উল্লেখ করেছে হোয়াইট হাউজ।
আর এই তথাকথিত অপপ্রচারের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যৌন নিপীড়নকারী কুখ্যাত জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে ডেমোক্র্যট নেতা বিশেষ করে সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের কী সম্পর্ক ছিল তা খতিয়ে দেখতে মার্কিন বিচার বিভাগের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ট্রাম্প। যদিও রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, নিজেকে এপস্টেইন কাণ্ড থেকে আড়াল করতে শুক্রবার আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রধানদের প্রতি এই আহ্বান মার্কিন প্রেসিডেন্টের।
আরও পড়ুন:
ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে এপস্টেইনের সম্পর্ক কী?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ডেমোক্র্যাটরা বিপর্যয়কর শাটডাউন এবং তাদের অন্যান্য ব্যর্থতা থেকে দৃষ্টি সরাতে এপস্টেইনের মতো এক প্রতারকের আশ্রয় নিয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি, বিচার বিভাগ এবং এফবিআই-কে অনুরোধ করছি, আপনারা বিল ক্লিনটন, ল্যারি সামার্স, হফম্যান, জে.পি. মর্গান চেজ ছাড়াও বেশ কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এপস্টেইনের সম্পৃক্ততার বিষয়টি তদন্ত করুন।
ক্লিনটন ছাড়াও বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক ও আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান জে পি মরগান চেজ, হার্ভার্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট ল্যারি সামারসের বিরুদ্ধেও বিচার বিভাগ ও এফবিআই তদন্তের দাবি করেছেন ট্রাম্প। ক্লিনটনের অর্থমন্ত্রী ছিলেন এই ল্যারি সামারস।
শুক্রবার ট্রাম্পের এই আহ্বানে সাড়া দিয়েছে মার্কিন বিচার বিভাগ। অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি নিশ্চিত করেছেন, ম্যানহাটনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রসিকিউটর এই অভিযোগের তদন্ত করবেন।
এদিকে, যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় এপস্টেইনকে সহায়তা করায় ২০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন তার সহযোগী ও প্রেমিকা গিসলেইন ম্যাক্সওয়েল। গেল মাসে ম্যাক্সওয়েলকে ক্ষমা করে শাস্তি কমানোর আভাস দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নেয়ায় এখন ট্রাম্প বলছেন, এ বিষয়ে তিনি কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি।
এখনও বিষয়টি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি। কয়েক মাস হয়ে গেছে, আমার এটা মনেই ছিল না। আপনি জিজ্ঞেস করলেন বলে বিষয়টা মাথায় এসেছে। আমি হ্যাঁ বা না কিছুই বলছি না।
নিপীড়নকারী এপস্টেইনের সঙ্গে ১৯৯০ এর দশক থেকে ২০০০ সালের শুরুর দিকে ট্রাম্পের যোগাযোগ ছিল। ২০০৪ সালে তাদের সম্পর্কের অবনতি হয়। ট্রাম্প একাধিকবার দাবি করেছেন, এপস্টেইনের অবৈধ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তিনি জানতেন না।





