প্রকাশ্যে অবজ্ঞা করলেও পর্দার আড়ালে মামদানির প্রশংসাই করছেন ট্রাম্প: নিউ ইয়র্ক টাইমস

জোহরান মামদানি ও ডোনাল্ড ট্রাম্প
জোহরান মামদানি ও ডোনাল্ড ট্রাম্প | ছবি: সংগৃহীত
0

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বনাম নব-নির্বাচিত মেয়র মামদানি। রাষ্ট্র প্রধানের সব হুমকি-ধামকি, চোখরাঙানিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নিউ ইয়র্কের দায়িত্ব ভোটাররা মামদানির হাতে তুলে দিলেও, সম্পূর্ণ বিপরীত মতাদর্শী দুই নেতার চূড়ান্ত মোকাবিলা এখনও বাকি, বলা যায় মাত্র শুরু। নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, প্রকাশ্যে মামদানিকে অবজ্ঞা করলেও পর্দার আড়ালে তার ভূয়সী প্রশংসাই করছেন ট্রাম্প।

জনসমক্ষে উগ্রবাদী, কমিউনিস্ট, নিউ ইয়র্কের জন্য বিপদ- এমন কোনো নেতিবাচক বিশেষণ নেই, যেটায় জোহরান মামদানিকে ভূষিত করেননি ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু বয়সে দ্বিগুণের বেশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট যে রাজনীতির ময়দানে সমান চৌকশ নন, নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় নিশ্চিত করে সেটাই যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন নিউ ইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র।

প্রকাশ্যে ৩৪ বছর বয়সী মামদানির চেয়ে নিজেকে বেশি সুদর্শন বলেও দাবি করেছেন ৭৯ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট। কিন্তু শোনা যাচ্ছে, বন্ধ দরজার ওপাশে সুর ভিন্ন ট্রাম্পের। অনিচ্ছায় হলেও পর্দার আড়ালে মামদানিকে তিনি বিশেষায়িত করছেন মেধাবী রাজনীতিক, চটকদার আর সুবক্তার মতো ভালো ভালো বিশেষণেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রেসিডেন্টের দুই সহযোগীর বরাত দিয়ে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস।

আরও পড়ুন:

তবে দিনশেষে দুই নেতা এগিয়ে যাচ্ছেন বেশ উত্তেজনাপূর্ণ এক প্রতিযোগিতার দিকে। গণতন্ত্রপন্থি সমাজতান্ত্রিক তরুণ নেতা দাঁড়িয়ে গেছেন এমন এক রাষ্ট্রপ্রধানের বিরুদ্ধে, যিনি আগেই মামদানিকে শক্ত প্রতিপক্ষ ভেবে ফেলেছেন। ট্রাম্পঘনিষ্ঠরা এরই মধ্যে স্বীকার করে নিয়েছেন যে প্রেসিডেন্টের পরবর্তী আক্রমণের সম্ভাব্য লক্ষ্য মামদান ও নিউ ইয়র্কবাসী। যদিও ধনকুবের ও ব্যবসায়ী প্রেসিডেন্টের বহু আবাসন প্রকল্প শহরটিতে রয়েছে বলে নিউ ইয়র্কের আর্থিক সাফল্যে স্বার্থও জড়িয়ে আছে ট্রাম্পের। নিউ ইয়র্ককে সফল দেখতে চান বলে মামদানিকে খানিকটা সহযোগিতার আভাস দিলেও, শহরের জন্য প্রয়োজনের খুব সামান্যই সরকারি তহবিল বরাদ্দ দেবেন বলেও হুমকি দিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প।

স্বাস্থ্যসেবা, পরিবহন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ নানা খাতে কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিল পায় নিউইয়র্ক শহর। এসব খাতের একটিতেও তহবিল বাতিল করতে চাইলে মামলার মুখে পড়তেই হবে ট্রাম্প প্রশাসনকে। আপাতদৃষ্টিতে এমন লড়াইয়ের জন্য যে মামদানি প্রস্তুত, বিজয় ভাষণেই দিয়ে ফেলেছেন সে আভাস।

মামদানির বুধবারের এ ভাষণ যে আসলেও টিভিতে দেখেছেন ট্রাম্প, এরই মধ্যে সেটি নিশ্চিতও করেছেন হোয়াইট হাউজ প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের হুমকিতে মাথা নত না করে বরং মামদানি তার রাজনৈতিক অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন বলেও জানিয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রতিপক্ষ।

আইনি পথ ছাড়া ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য মামদানির হাতে পথ নেই বললেই চলে। জানুয়ারিতে চার বছরের জন্য দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাওয়া নবনির্বাচিত মেয়র নগরীর আইন বিভাগে এরই মধ্যে ২০০ অতিরিক্ত আইনজীবী নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন।

ইএ