সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল সার্বিয়া

সার্বিয়ায় বিক্ষোভ
সার্বিয়ায় বিক্ষোভ | ছবি: রয়টার্স
0

বিক্ষোভে উত্তাল সার্বিয়া। রেলওয়ে ভবনের ছাদ ধসে হতাহতের ঘটনার এক বছরেও দোষীদের বিচার নিশ্চিত না করায় ক্ষোভে ফুঁসছে বাসিন্দারা। দাবি উঠেছে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও আগাম নির্বাচনের। এদিকে রেলওয়ের ছাদ ধসের ঘটনাটিকে সন্ত্রাসবাদ বলে দাবি দেশটির প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার ভুচিচ। তবে গত সপ্তাহে প্রকাশিত একটি স্বাধীন কমিশনের রিপোর্টে প্রকল্পটিতে বড় ধরনের দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে।

বেশ কয়েকমাস ধরে সরকারবিরোধী আন্দোলনে সরব ইউরোপের দেশ সার্বিয়া। গত বছর নভেম্বরে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় নোভি সাদ শহরে একটি রেলস্টেশনের ছাদ ধসে প্রাণ হারায় ১৬ জন। ভুক্তভোগীদের পরিবার ঘটনাটির জন্য সরকারি কর্তৃপক্ষের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করে এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বারবার সরকারের কাছে আহ্বান জানালেও, বিচার নিশ্চিত না হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছে দেশটির সাধারণ মানুষ। এরইমধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার ভুচিচের পদত্যাগ ও আগাম নির্বাচনের দাবিও করেছেন বিক্ষোভকারীরা। বেশ কয়েকবার পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়ায় বিক্ষোভকারীরা, গ্রেপ্তার হয় অনেকে।

গত সোমবার নোভি সাদ ট্রাজেডিতে নিহত এক ভুক্তভোগীর মা দোষীদের শাস্তি ও আগাম নির্বাচনের দাবিতে অনশনে নামে। তার অভিযোগ মার্চ থেকে পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছেন না তিনি। এছাড়া, আন্দোলন দমাতে সরকার দেশটির পুলিশ বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়েছে বলেও অভিযোগ তার।

বিক্ষোভকারীদের একজন বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীর লজ্জা পাওয়া উচিত। আমরা এর শেষ দেখতে চাই। আন্দোলন দমাতে যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদেরকে মুক্তি দিতে হব এবং ভুচিকে দ্রুত নির্বাচনের ঘোষণা দিতে হবে।’

আরও পড়ুন:

তাকে সমর্থন জানাতে বেলগ্রেডে পার্লামেন্ট ভবনেন সামনে জড়ো হয় কয়েকশো মানুষ। এসময় তারা ভুচিচ সরকারবিরোধী নানা স্লোগান দেন। দিন গড়িয়ে রাতেও ভারী বৃষ্টিপাত ও পুলিশি বাধাকে উপেক্ষা করেই নিজেদের দাবিতে অনড় থাকে বিক্ষোভকারীরা। এসময় তারা ভুচিচ সরকারের পদত্যাগের দাবি করেন।

অন্য আরেকজন বিক্ষোভকারী বলেন, ‘মাফিয়া শাসনব্যবস্থার অপসারণ ও ক্ষমতাচ্যুতর মাধ্যমেই সমস্যাটির সমাধান সম্ভব। ভুচিচ ও তার প্রশাসন আত্মঘাতী খেলায় মেতেছে। খুব দ্রুত এর করুণ পরিণতি ঘটবে। আমরা এটি হতে দেব না।’

এর আগে রোববার পার্লামেন্ট ভবনের সামনে জড়ো হয় বিক্ষোভকারীরা। এসময় পুলিশ তাদেরকে সরিয়ে দিতে চাইলে শুরু হয় সংঘর্ষ। এক পর্যায়ে বিক্ষোভ দমনে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। জননিরাপত্তা লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে এ ঘটনায় ৩৭ জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে সার্বিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

নভেম্বরের শুরুতে নোভি সাদ ট্রাজেডির এক বছর পূর্তিতে নিহতদের স্মরণে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন শহরটিতে। নিহত প্রত্যেকের স্মরণে ১৬ মিনিট নীরবতা পালন করেন তারা। এছাড়া, গত সপ্তাহে ঘটনা তদন্তে গঠিত একটি স্বাধীন কমিশন তাদের রিপোর্ট পেশ করেছে ইউরোপীয় কমিশনের কাছে। তারা জানান, প্রকল্পটিতে বড় ধরনের দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। তবে এগুলোকে উড়িয়ে দিয়ে সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার ভুচিচ ও পার্লামেন্ট স্পিকার অ্যানা ব্রনাবিক ঘটনাটিকে সন্ত্রাসবাদ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

এফএস