জার্মানিতে ধ্বংস করা হলো পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি কুলিং টাওয়ার

0

জার্মানিতে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের প্রায় চার বছর পর ধ্বংস করা হলো দুটি কুলিং টাওয়ার। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ নিয়ে দেশটির রাজনীতিতে বিরোধ থাকলেও টাওয়ারগুলো ধ্বংস দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন স্থানীয়রা। ১৯৮০ সালে নির্মিত এসব টাওয়ার বাসিন্দাদের কাছে শহরের একটি অংশ হয়ে উঠেছিল।

জার্মানির স্থানীয় সময় দুপুরে বিস্ফোরণের মাধ্যমে ধ্বংস করা হয় দক্ষিণ জার্মানির বাভারিয়ার গুনডরেমিংগেন শহরের দুটি কুলিং টাওয়ার। ২০১১ সালে জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক বিপর্যয়ের পর থেকে ধীরে ধীরে পারমাণবিক শক্তি থেকে সরে আসছিল জার্মানি। ২০২৩ সালে শেষ তিনটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও বন্ধ হয়ে যায়।

স্থানীয় অনেকের জন্যই টাওয়ারগুলোর ধ্বংস হওয়ার মুহূর্তটি ছিলো আবেগঘন। ১৯৮০ সাল থেকেই এটি এ শহরের একটি অংশ ছিলো।

স্থানীয় এক মহিলা বলেন, ‘আমি শুধু প্রথম টাওয়ারটির ধসে পড়া দেখেছি; দ্বিতীয়টি একদমই দেখতে পারিনি, শুধু বিশাল ধোঁয়ার মেঘ দেখেছি। কিন্তু এটি আমার জন্য খুবই আবেগঘন মুহূর্ত। এটি ছিলো এক বিশাল স্থাপনা, আর এখন সেটি ইতিহাস।’

আরও পড়ুন:

প্রায় ৩০ হাজার মানুষ টাওয়ারগুলো ধ্বংসের এ দৃশ্য দেখতে আসে। যদিও প্রায় চার বছর ধরে এগুলো অচল অবস্থায় ছিলো, তবে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দামের ঊর্ধ্বগতির এ সময়ে পারমাণবিক শক্তি থেকে সরে আসার যৌক্তিকতা নিয়ে মতভেদ আছে দেশটির রাজনীতিবিদদের মধ্যে।

পারমাণবিক জ্বালানিকে সমর্থন করেন এমন একটি সংস্থা এ কুলিং টাওয়ারগুলো ধ্বংসের প্রতিবাদ জানায়। জার্মান জ্বালানি নীতির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ভুল বলে অভিহিত করে তারা। এরআগেও বাভারিয়ার স্টেট মিনিস্টার মার্কুস সোডারসহ বেশ কিছু রক্ষণশীল রাজনীতিবিদ পারমানবিক জ্বালানির পক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন।

টাওয়ারগুলো ধ্বংসের সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শহরটির মেয়রও। তিনি বলেন, ‘আজ আমি পারমাণবিক শক্তির বিরোধী এবং সমর্থক—দু’পক্ষের সঙ্গেই কথা বলেছি। সবার মনোভাব প্রায় একই। আমাদের ঘরের এক টুকরো যেন হারিয়ে গেলো।’

বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিক প্রতিষ্ঠান (আরডাব্লিউই) জানায়, টাওয়ার দুটি তাদের কার্যক্রম চলাকালে কখনোই তেজস্ক্রিয় পদার্থের সংস্পর্শে আসেনি। এগুলো ধ্বংস করতে প্রায় ৬০০ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক ও ১,৮০০টি গর্ত তৈরি করা হয়। ধ্বংসাবশেষের কংকর পুনর্ব্যবহার করে নির্মাণ সামগ্রী হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

এফএস