বর্তমান যুদ্ধরেখায় শান্তি আলোচনায় রাজি ইউক্রেন, অনড় রাশিয়া

ভ্লাদিমির পুতিন ও ভলোদিমির জেলেনস্কি
ভ্লাদিমির পুতিন ও ভলোদিমির জেলেনস্কি | ছবি: সংগৃহীত
0

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে বর্তমান যুদ্ধরেখায় শান্তি আলোচনার বিষয়ে একমত হয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতারা। যুদ্ধ বন্ধে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থানকেও সমর্থন জানিয়েছে তারা। কিন্তু বর্তমান যুদ্ধরেখায় সংঘাত থামানোর বিষয়ে রাজি নয় রাশিয়া। এদিকে হাঙ্গেরিতে ট্রাম্প-পুতিনের শান্তি আলোচনা বৈঠকের বিষয়ে তাৎক্ষণিক পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। এর আগে বৈঠকের কোনো তারিখ নির্ধারিত হয়নি বলে জানিয়েছিলো ক্রেমলিন।

নিজের দ্বিতীয় মেয়াদে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ব্যাপক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউরোপীয় নেতারা ট্রাম্পের প্রস্তাব সমর্থন করলেও, রাশিয়া বলছে এখনই যুদ্ধ থামানো সম্ভব নয়।

ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী বর্তমান যুদ্ধরেখায় শান্তি স্থাপনের বিষয়ে একমত হয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা। এক বিবৃতিতে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারসহ ১১ জন ইউরোপীয় নেতা জানান, অবিলম্বে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে তারা মার্কিন প্রেসিডেন্টের অবস্থানকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করছেন।

তবে এ সিদ্ধান্তে বরাবরের মতো বেঁকে বসেছে রাশিয়া। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মস্কো কেবল দীর্ঘমেয়াদি, টেকসই শান্তিতে আগ্রহী । বর্তমান যুদ্ধরেখা স্থগিত করেন তা একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, ‘এখন আমরা ওয়াশিংটন থেকে শুনি যে আমাদের অবিলম্বে থামতে হবে এবং আমাদের আর কোনও আলোচনা করা উচিত নয়। থামুন এবং ইতিহাসকে বিচার করতে দিন। যদি আমরা কেবল থামি, তাহলে এর অর্থ হবে সংঘাতের মূল কারণগুলি ভুলে যাওয়া।’

আরও পড়ুন:

এদিকে হাঙ্গেরি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ট্রাম্পের সাথে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শান্তি আলোচনা বৈঠকের বিষয়ে তাৎক্ষনিক কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। এর আগে বৈঠকের কোনো সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ হয়নি বলে জানিয়েছিল ক্রেমলিন।

গেল সপ্তাহে পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর ট্রাম্প জানিয়েছিলেন শান্তি আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে পুতিন। যদিও ওই সময় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি পুতিন। ফোনালাপের এক দিন পর হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানায়, ওই বৈঠকে ট্রাম্প ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলের বড় অংশ ডনবাস — রাশিয়ার কাছে ছেড়ে দিতে জেলেনস্কিকে চাপ দিয়েছিলেন ট্রাম্প।

কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈঠকে তীব্র বাকবিতণ্ডাও হয়েছে। যদিও ট্রাম্পের সাথে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। আর জেলেনস্কিকে ডনবাস ছেড়ে দিতে বলার বিষয়টি অস্বীকার করেন ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা কখনও এটা নিয়ে আলোচনা করিনি। আমরা মনে করি যুদ্ধক্ষেত্রে, যেখানে তারা আছে, সেখানেই থামানো উচিত। বাকিটা আলোচনা করা খুব কঠিন। আমি যা বলছি তা হল তাদের এখনই যুদ্ধক্ষেত্রে থামানো উচিত, বাড়ি ফিরে যাওয়া উচিত, মানুষ হত্যা বন্ধ করা উচিত।’

চলতি সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রতিনিধি দলের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রতিনিধি দলের বৈঠকের মাধ্যমেই ট্রাম্প-পুতিনের শীর্ষ সম্মেলনের প্রস্তুতি নেয়ার কথা ছিলো।

ইএ