বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করলেও, এখন পর্যন্ত কোনো নারী নেতৃত্ব পায়নি জাপান। তবে সেই ইতিহাসকে পাল্টে দিয়ে এবার প্রথমবারের মতো দেশটির মসনদে বসতে যাচ্ছেন ৬৪ বছর বয়সী সানাই তাকাইচি। মঙ্গলবার জাপানের পার্লামেন্টের উভয় কক্ষেই সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পান তিনি। আর এতেই নিশ্চিত হয় তার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথ।
আরও পড়ুন:
জাপানের নিম্নকক্ষে ৪৬৫ আইনপ্রণেতার মধ্যে ২৩৩ জনের সমর্থন প্রয়োজন ছিল তাকাইচির। তবে, ভোটাভুটিতে ২৩৭ আইনপ্রণেতার সমর্থন পান তিনি।
বিবিসি জানায়, মূলত নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পাওয়ায় সুগম হয় তাকাইচির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথ। এরপর আসে, উচ্চকক্ষের ফল। এতে ২৪৮-এর মধ্যে ১২৫ ভোট পান তাকাইচি। জেতার জন্য প্রয়োজন ছিল ১২৪ ভোট।
জাপানের সংবিধান অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হতে পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের সমর্থনের প্রয়োজন হয়। যেহেতু উভয়কক্ষেই সমর্থন নিশ্চিত করেছেন তাকাইচি, দ্রুতই সরকার গঠন করবেন তিনি।
এর আগে, পার্লামেন্টের উভয়কক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর, সেপ্টেম্বরে পদত্যাগ করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। এরপর জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি তাদের দলীয় প্রধান হিসেবে ভোটাভুটিতে বেছে নেন সানাই তাকাইচিকে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক মন্দা, মুদ্রাস্ফীতি ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সাম্প্রতিক তিক্ত সম্পর্কের জেরে সামনের দিনগুলোতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীকে।
১৯৬১ সালে জাপানের নারা প্রিফেকচারে জন্ম নেওয়া তাকাইচির পরিবারের সঙ্গে রাজনীতির তেমন কোনো সম্পর্কই ছিল না। চাকরিজীবী বাবা ও মা ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। দক্ষ হেভি মেটাল ড্রামার হিসেবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তাকাইচি। তবে ১৯৮০'র দশকে যুক্তরাষ্ট্র-জাপান বাণিজ্য দ্বন্দ্ব তাকে রাজনীতির প্রতি আগ্রহী করে তোলে।
১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তাকাইচি। এরপর ১০ বার জাপানের এমপি নির্বাচিত হন তিনি। দলের যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তার বলিষ্ঠ ভূমিকার কারণে তিনি আয়রন লেডি হিসেবেও পরিচিত।
দেশটির প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিসিন্দা সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যও ছিলেন তাকাইচি। এর আগেও দুইবার ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির হয়ে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য লড়েছেন এলডিপির এই নেত্রী।





