মেক্সিকোতে বন্যা: নিহত অন্তত ৭২, নিখোঁজ অর্ধশত

মেক্সিকোর বন্যা পরিস্থিতি
মেক্সিকোর বন্যা পরিস্থিতি | ছবি: সংগৃহীত
0

গেল সপ্তাহের বন্যায় মেক্সিকোতে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৭২ জন। এখনও নিখোঁজ রয়েছে অন্তত অর্ধশত। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু ঘরবাড়ি। রাস্তায় রাত কাটাচ্ছে গৃহহীন বাসিন্দারা। পানি নেমে গেলেও কাদার স্তূপের কারণে বাড়ি ফিরতে পারছেন না। ত্রাণ সহায়তা ও উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি নৌবাহিনী।

এক সপ্তাহ পর নামতে শুরু করেছে বন্যার পানি। মেক্সিকোর পূর্বাঞ্চলে চারদিকে ধ্বংসস্তূপের চিত্র। মাটি-কাদায় বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি চেনার উপায় নেই। কেউ কেউ খুঁজে ফিরছেন বন্যার সময় হারিয়ে যাওয়া স্বজনদের। বাড়ি ফিরতে না পারায় গৃহহীন মানুষগুলো সরকারি সাহায্যের আশায় দিন গুনছেন।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, ‘আমি চাই সরকার আমাদের সহায়তা করুক, যারা তাদের আত্মীয়স্বজনদের খুঁজে পাচ্ছে না তাদের সাহায্য করুক। একজন মা হিসেবে, আমি এ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আমি আমার মেয়ে এবং নাতিকে খুঁজে পাওয়ার আশায় কাদার মধ্যে তিন দিন তিন রাত কাটিয়েছি।’

তবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন সরকারি সাহায্য খুবই সীমিত। বেশিরভাগ সাহায্যই এসেছে অন্য এলাকার বাসিন্দাদের থেকে।

বাসিন্দারা বলেন, ‘চারপাশে প্রচুর আবর্জনা পড়ে আছে, পশুপাখি পঁচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। কর্তৃপক্ষ চোখ বন্ধ করে রেখেছে। মানুষ ত্বকের ছত্রাক, রক্তক্ষরণজনিত ডেঙ্গু, জিকাসহ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। কোনও ডাক্তার আসেনি। আমাদের তাদের প্রয়োজন। আমাদের সন্তান আছে।’

আরও পড়ুন:

একটানা ভারী বৃষ্টিতে পূর্ব মেক্সিকোর পেজা রিকো অঞ্চলের নদীর পানি উপচে পড়ে বন্যা পরিস্থিতি হয়। ভূমিধসের ঘটনাও ঘটে বেশকিছু অঞ্চলে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ঘরবাড়িসহ প্রায় ১ লাখ অবকাঠামো। প্রাণ হারায় অর্ধশতাধিকেরও বেশি মানুষ। নিখোঁজ হয় অনেকেই।

এদিকে দেশটির নৌবাহিনী জানিয়েছে বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে ত্রাণ সরবরাহ ও ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করার জন্য একাধিক হেলিকপ্টার ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

মেক্সিকোর নৌবাহিনীর পাইলট কার্লোস গ্রোগোরিও বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন বেশ কয়েকটি ফ্লাইট পরিচালনা করছি, এমআই-সেভেনটিন, ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার এবং প্যানথার হেলিকপ্টার সহ বিভিন্ন বিমান ব্যবহার করছি, যেগুলো ত্রাণ সরবরাহসহ আকাশপথে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা ও নদীর প্রবাহ পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়।’

আবহাওয়ার পূর্বাভাসের অভাবে যথেষ্ট পূর্বপ্রস্তুতি না নিতে পারায় আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের কারণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হয়েছে। অন্যদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষয়ক্ষতির জন্য সরকারের দুর্বলতাকেই দায়ী করছে বিরোধী দলগুলো।

ইএ