মূলত বিদ্যুৎ ও পানির সংকট নিয়ে শুরু হওয়া বিক্ষোভ রূপ নেয় সরকারবিরোধী আন্দোলনে। মাত্র তিন সপ্তাহের মাথায় পতন ঘটে মাদাগাস্কার সরকারের।
জেন-জি আন্দোলনে লণ্ডভণ্ড মাদাগাস্কারের সরকারব্যবস্থা। গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে বিদ্যুৎ ও পানির সংকটকে কেন্দ্র করে দেশটিতে শুরু হওয়া আন্দোলনের জেরে আগেই পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান এনটসে।
এবার এর জেরে দেশ ছাড়লেন প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা। দেশটির সামরিক বাহিনীর বরাতে রয়টার্স জানায়, রোববার (১২ অক্টোবর) ফ্রান্সের একটি সামরিক বিমানে চেপে দেশ ছাড়েন তিনি।
সামরিক সূত্রটি জানায়, রোববার ফরাসি সেনাবাহিনীর একটি বিমান মাদাগাস্কারের সেন্ট মেরি বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এর ৫ মিনিট পর হেলিকপ্টার থেকে আসা এক যাত্রী বিমানটিতে চড়ে। তাদের দাবি, এই যাত্রী-ই রাজোয়েলিনা।
তার দেশ ছাড়ার তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন মাদাগাস্কার সংসদের বিরোধী দলীয় নেতাও। তিনি জানান, সেনাবাহিনীর একটি ইউনিট বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দেয়ায় রোববার দেশ ছাড়েন রাজোয়েলিনা।
এদিকে সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ফ্রান্সের গণমাধ্যম আরএফআই জানায়, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে একটি চুক্তির পর দেশত্যাগ করেন তিনি। তবে মাদাগাস্কারের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে ফ্রান্স হস্তক্ষেপ করবে না বলে জানিয়েছে ফরাসি কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন:
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘মাদাগাস্কারের সাংবিধানিক শৃঙ্খলা ও প্রাতিষ্ঠানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশটিতে জনগণ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ সাংবিধানিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়লে কী পরিণতি ঘটে, তা মাদাগাস্কারের জনগণ জানে।’
এদিকে গতকাল (সোমবার, ১৩ অক্টোবর) রাতে ফেসবুকে প্রচারিত এক ভাষণে রাজোয়েলিনা জানান, জীবন রক্ষায় নিরাপদ স্থানে অবস্থান করছেন তিনি।
তবে তিনি ঠিক কোথায় অবস্থান করছেন তা স্পষ্ট করেননি। কূটনৈতিক সূত্রগুলোর দাবি, পদত্যাগে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি দেশটির সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণভার নেয় ক্যাপসাট নামে সামরিক বাহিনীর একটি বিদ্রোহী ইউনিট। এর সদস্যরা দেশটিতে চলমান আন্দোলনে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালাতে অস্বীকৃতি জানায়। পাশাপাশি কিছু সামরিক সদস্য মাদাগাস্কারের রাজধানী আন্তানানারিভোতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে অংশও নেয়।
এরপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন রাজোয়েলিনা। এই ইউনিটটিই ২০০৯ সালের অভ্যুত্থানে তাকে ক্ষমতা দখলে সাহায্য করেছিল।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া জেন-জি আন্দোলনে অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছেন।





