ইয়েমেনের রাজধানী সানার কেন্দ্র স্থলে বুধবার সন্ধ্যায় ইসরাইলি যুদ্ধবিমান থেকে ফেলা হয় বোমা। লক্ষ্য ছিল ‘২৬শে সেপ্টেম্বর' ও ‘আল-ইয়েমেন’ নামে দুটি পত্রিকার অফিস। মুহূর্তেই ধসে পড়ে ভবন, চাপা পড়েন বহু সাংবাদিক ও কর্মী।
ইয়েমেনের সাংবাদিক এসাম আল মোশকি বলেন, ‘ইসরাইলি যুদ্ধবিমান ‘২৬শে সেপ্টেম্বর’ পত্রিকার কার্যালয়ে চারটি বোমা ফেলে। বিস্ফোরণটি ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী, যা পুরো ভবনটিকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেয়। আমাদের সংবাদ সংস্থার কোনো সামরিক সংশ্লিষ্টতা নেই। অনেক সাংবাদিক তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।’
হামলায় শুধু পত্রিকা অফিস নয়, আশেপাশের আবাসিক এলাকাও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নারী-শিশুসহ বহু নিরীহ মানুষ হতাহত হয়েছেন। হুথি-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, এই হামলায় নিহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশত, আহত আরও দেড় শতাধিক।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর দাবি, হুথি বাহিনীর ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে গোষ্ঠীটির সামরিক ঘাঁটি ও প্রচার দপ্তরে হামলা চালানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:
রোববার সকালে ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের সামনে জড়ো হন স্থানীয় সাংবাদিকরা। নিহত সহকর্মীদের শ্রদ্ধা নিবেদনে পালিত হয় স্মরণ সভা।
ইয়েমেনের হুথি গ্রুপের প্রেস কর্মকর্তা ওমর আল বুখাইতি বলেন, ‘শত্রু বারবার গণমাধ্যমকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, বিশেষ করে যারা ইসরায়েলের নৃশংসতা প্রকাশ করছিল। এ সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে। শহীদদের আত্মা শান্তিতে বিশ্রাম পাক।’
এদিকে, রাজধানী সানাসহ ইয়েমেনের বিভিন্ন জায়গায় ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সাধারণ জনগন।
তারা বলেন, ‘জায়োনিস্ট সরকারকে এ বার্তা দিতে চাই ইয়েমেনি জনগণ এবং গাজাবাসীর রক্ত বৃথা যাবে না। ইয়েমেনিরা, আমাদের শহীদদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছি। আমরা ফিলিস্তিনের পাশে আছি। শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা-আনুগত্য প্রকাশ করছি। গাজার প্রতি সমর্থন থেকে এক বিন্দু সরবো না। ইসরারইলের যুদ্ধজাহাজ-বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র কিংবা বোমা—কোনো কিছুই ভয় দেখাতে পারবে না।’
উত্তরের বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রণকারী হুথি গোষ্ঠী বলছে, গাজায় যুদ্ধ ও অবরোধ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তারা ইসরায়েলের ওপর পাল্টা আক্রমণ অব্যাহত রাখবে।





