শুধু গাজা উপত্যকায়ই নয়; ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটিতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অন্যতম মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতারের দোহায় সম্প্রতি হামলা চালিয়ে সীমা লঙ্ঘন করে ইসরাইল। এ অবস্থায় কাতারের পাশে দাঁড়িয়েছে আরব ও মুসলিম বিশ্বের নেতারা। এ তালিকায় আছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনও।
শীর্ষ সম্মেলনের আগে আরব ও মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে রোববার রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল-থানি। উপস্থিত বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা কাতারে চালানো ইসরাইলি আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানান। এছাড়া এটিকে কাতারের সার্বভৌমত্ব, আন্তর্জাতিক আইন ও কূটনৈতিক রীতিনীতিরও গুরুতর লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করা হয়। যা কাতার সহ্য করবে না বলে কড়া বার্তা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। এমনকি ইসরাইলি আগ্রাসনের হাত থেকে পুরো অঞ্চলকে নিরাপদ রাখতে আরব ও ইসলামী দেশগুলো মিলে যৌথ প্রতিরক্ষা জোট গঠনের আহ্বানও জানান তিনি।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল-থানি বলেন, ‘আমরা আমাদের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সহ্য করবে না। কাতারের সার্বভৌমত্ব এমন একটি বিষয় যা উপেক্ষা বা লঙ্ঘন করে কেউ পার পাবে না। আমরা আন্তর্জাতিক আইন দ্বারা নিশ্চিত সকল উপায়ে আমাদের প্রতি যেকোনো হুমকির মোকাবিলা করব।’
আরও পড়ুন:
বৈঠকে ইসরাইলকে সতর্ক করে কাতারের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন যে, আক্রমণ চালিয়ে গাজায় শান্তির জন্য মধ্যস্থতা প্রচেষ্টা থেকে কাতারকে থামানো যাবে না। এমনকি মিথ্যা যুক্তি দিয়ে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ক্রমাগত গণহত্যা এবং তাদের মাতৃভূমি থেকে জোরপূর্বক স্থানান্তর প্রচেষ্টায় ইসরাইল সফল হবে না হুঁশিয়ার করেছেন থানি।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল-থানি বলেন, ‘ইসরাইল বর্বরতার মধ্য দিয়ে তাদের অন্যায্য যুদ্ধ বন্ধের প্রচেষ্টা থেকে কাতারকে দূরে রাখতে পারবে না। মিশর এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা চলমান থাকবে। ইসরাইল কিছুতেই আমাদের বিরত রাখতে পারবে না।’
এ অবস্থায় কাতারে ইসরাইলি আক্রমণের বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রতিক্রিয়া জানানো ছাড়াও গাজায় আগ্রাসন বন্ধে আরব ও ইসলামী রাষ্ট্রগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আরব লীগের মহাসচিব আহমেদ আবুল- ঘাইট।
আরব লীগের সেক্রেটারি জেনারেল আহমেদ আবুল ঘাইট বলেন, ‘এ শীর্ষ সম্মেলনে একটি বার্তা খুব স্পষ্টভাবে সকলের কাছে পৌঁছাতে হবে। তা হল দখলদার ইসরাইলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সবার ঐক্যবদ্ধ হওয়া এবং কাতারের প্রতি আরব ও ইসলামী বিশ্বের সংহতি। কারণ কাতারে হামলা চালিয়ে বিশ্বাসঘাতকতার প্রমাণ দিয়েছে ইসরাইল।’
দোহায় হামাস নেতাদের মঙ্গলবার চালানো প্রাণঘাতী হামলার জেরে যখন কাতারে আরব ও মুসলিম বিশ্বের নেতারা এক হয়েছেন, ঠিক একই সময় ইসরাইলে অবস্থান করছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। এ মুহূর্তে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফর যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইলের অটুট সম্পর্কের প্রমাণ বলে মন্তব্য করেন নেতানিয়াহু।





