আজ (শুক্রবার, ২৮ মার্চ) দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে মিয়ানমারে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পের সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়েছে প্রতিবেশি দেশ থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে।
রয়টার্স জানায়, স্থানীয় সময় দুপুর থাইল্যান্ডের চাচুচাক ডিস্ট্রিক্টের বহুতল ভবনটি ধসে পড়ে। স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, এসময় সেখানে কাজ করছিলেন প্রায় ৪শ' শ্রমিক। ভবন ধসে খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন উদ্ধারকর্মীরা। পুরো অঞ্চলটিকে ইমার্জেন্সি জোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ভূমিকম্পের জেরে পুরো ব্যাংককে জারি হয়েছে জরুরি অবস্থা। সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে ব্যাংককের স্কাই ট্রেন পরিষেবা।
চাকচুক ছাড়া ব্যাংককের বিভিন্ন প্রান্তে ভূমিকম্প আতঙ্কে দিশেহারা হয়ে পড়েন স্থানীয়রা। ধাক্কাধাক্কি করে নেমে আসেন রাস্তায়। দিকবিদিক শূন্য অবস্থায় রাস্তায়। ছোটাছুটি করেছেন কেউ কেউ।
ব্যাংকক মূলত থাইল্যান্ডের বাণিজ্যিক এলাকা হওয়ায় সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে পড়েন বহুতল ভবনের কর্মীরা। বিপদ এড়াতে অফিস ছেড়ে বাইরে বের হয়ে আসেন ব্যাংকক রেডক্রসের কর্মকর্তারাও। প্রতিটি অফিস ভবনের সামনে ছিল কর্মীদের জটলা।
এদিন, পরপর দুটি ভূমিকম্প আঘাত হানে মিয়ানমারে। ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানায়, ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের ১২ মিনিট পর মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানে ৬.৪ মাত্রার আরও একটি ভূমিকম্প। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল মিয়ানমারের সাগাইন থেকে ১৬ কিলোমিটার উত্তর-উত্তর পশ্চিমে এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে অন্তত ১০ কিলোমিটার গভীরে।
বার্তা সংস্থা এপির তথ্য বলছে, প্রলয়ংকরী দু'টি ভূমিকম্পের আঘাতে মিয়ানমারে ভেঙে ৯১ বছরের পুরোনো আভা সেতু। মধ্যাঞ্চল ও রাজধানী নেইপিদোর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সৃষ্টি হয়েছে ফাটল। ভবন ধস ও ছাদ ভেঙে পড়ার খবরও মিলেছে কোথাও কোথাও। উত্তর মিয়ানমারের মান্দেলায় উদ্ধারকর্মীদের সাথে কথা বলে বিবিসি জানায়, দেশটিতে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
এদিকে, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড ছাড়াও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে চীন, নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশে। ভূমিকম্পের আঘাতে চীন সীমান্তবর্তী তিব্বতে অন্তত ২০০ মানুষ আহত হয়েছে বলে জানাচ্ছে মার্কিন সংবাদ সংস্থা দ্যা সান। আর চীনের সিগাটসে শহরে আহত অন্তত দেড়শতাধিক।