ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে ইতি টানতে চাপ বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

বিদেশে এখন
0

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে ইতি টানতে চাপ বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী ২০ এপ্রিলের মধ্যে বড় পরিসরে অস্ত্রবিরতির চুক্তিতে পৌঁছানোর আশা মার্কিন প্রশাসনের, বলছে ব্লুমবার্গ। এর মধ্যেই, সৌদি আরবে রোববার (২৩ মার্চ) শুরু হয়েছে আলোচনা; আজ সোমবারও (২৪ মার্চ) রিয়াদে আলাদাভাবে কিয়েভ ও মস্কোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবে ওয়াশিংটন।

সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউক্রেন ও রাশিয়ার আলাদা দুই বৈঠকের আগ মুহূর্তে রাশিয়ার আগ্রাসী ড্রোন হামলার শিকার কিয়েভ। রোববারের ওই হামলায় প্রাণ যায় পাঁচ বছরের শিশুসহ বেশ ক'জনের।

ইউক্রেনের বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘আমাদের জীবন এতো জটিল হয়ে গেছে যে অস্ত্রবিরতির খবর শোনার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছি। সারাক্ষণ হামলার আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে। অর্থনৈতিকভাবে ভেঙে পড়েছি। যুদ্ধ বন্ধ হলে একটু স্বস্তি ফিরবে।’

আরেকজন বলেন, ‘ইউক্রেন অস্ত্রবিরতিতে সম্মতি না দেয়া পর্যন্ত রাশিয়া আগ্রাসন চালাতে থাকবে। ইউক্রেনের রাজি না হওয়াকেই হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবে রাশিয়া। শব্দের চেয়ে অস্ত্রের ব্যবহারই তাদের পছন্দ।’

যুদ্ধরত দুপক্ষেরই হামলা-পাল্টা হামলা অব্যাহত। এর মধ্যেই ইউক্রেন-রাশিয়ার তিন বছরের যুদ্ধে ইতি টানতে শান্তি চুক্তির লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের চাপে জোরদার হয়েছে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা। সৌদি আরবে রোববার ইউক্রেনীয় ও মার্কিন প্রতিনিধি দলের দ্বিতীয় বৈঠক হয়। বৈঠক ইতিবাচক ছিল জানিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করছে রাশিয়া।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, 'এবারের বৈঠকের বড় অংশ ছিল কারিগরি পর্যায়ে, আমাদের সেনাবাহিনী, কূটনীতিক এবং জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে। সম্পূর্ণ গঠনমূলক কায়দায় কাজ করছে আমাদের দল। প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়েছে। তবে আলোচনার বিষয়বস্তু যাই হোক না কেন, হামলা বন্ধে পুতিনের নির্দেশনাই মূল বিষয়। যুদ্ধ যে শুরু করেছে, তাকেই এটা শেষ করতে হবে।'

সূত্রের বরাতে ব্লুমবার্গ নিউজের রোববারের প্রতিবেদনে উঠে আসে, আগামী ২০ এপ্রিলের মধ্যে বড় পরিসরে অস্ত্রবিরতির চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব বলে আশা মার্কিন প্রশাসনের। বিশ্লেষক ও ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, কৃষ্ণসাগর হয়ে নিরাপদ বাণিজ্য নিশ্চিত করা মূল লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে অদূর ভবিষ্যতে আলোচনার টেবিলে মুখোমুখি হতে পারেন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

রাশিয়ার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ বলেন, ‘নিঃসন্দেহে দুই প্রেসিডেন্টের ফোনালাপ তাদের মুখোমুখি বৈঠকের পথে আরেক ধাপ অগ্রগতি। যথাযথ প্রস্তুতির মাধ্যমে বৈঠক আয়োজন করতে হবে। আগে জটিল কিছু কারিগরি আলোচনা হতে হবে। জটিল এ প্রক্রিয়া শুরু করার লক্ষ্যে রিয়াদে সফর করছেন আমাদের প্রতিনিধিরা। যৌথ সমঝোতা ও চুক্তিসহ বিশেষ কিছু অগ্রগতির পর আরও সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলবেন প্রেসিডেন্টরা।’

যুদ্ধরত দুই পক্ষ আলোচনার টেবিলে এক হয়নি এখনও। ইউক্রেনের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের বৈঠকের পরদিন সোমবারই রিয়াদে রুশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে মার্কিন প্রশাসন। একইদিন ফের আলোচনা হতে পারে কিয়েভের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও।

ইএ