দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) প্রথমবারের মতো মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মন্ত্রী না হয়েও সে বৈঠকে আমন্ত্রণ পেয়েছেন ট্রাম্প প্রশাসনের ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সির প্রধান ও প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ইলন মাস্ক। মাস্কের কর্মী ছাঁটাই অভিযান নিয়ে সরকারি দপ্তর ও নিজ দলের মধ্যে দ্বিধাবিভক্তি সৃষ্টি হলেও- এক্ষেত্রে আরো একবার তাকে পূর্ণ সমর্থন দেন ট্রাম্প। সবুজ সংকেত দিয়েছেন বাজেট কাটছাটের পরিকল্পনায়ও।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আপনাদের সামনে সরকারি ব্যয় সংক্রান্ত সবশেষ তথ্য হাজির করবেন ইলন। কিছু তথ্য খুবই চাঞ্চল্যকর। কিছু অর্থ চুরি হয়েছে, জালিয়াতির নজিরও আছে। এগুলোকে আমি অপচয় বলবো না, এটা ক্ষমতার অপব্যবহার। এমন অনেক জালিয়াতি ও অর্থ চুরির নজির আছে যা প্রমাণ করাও কঠিন।’
এদিন কর্মী ছাঁটাই ও বাজেট হ্রাস নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন উপদেষ্টা ইলন মাস্ক। চলতি অর্থবছরের সম্ভাব্য ৬.৭ ট্রিলিয়ন বাজেট থেকে ১ ট্রিলিয়ন ডলার কাটছাটের পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। বলেন, সরকারি ব্যয়ের লাগাম টেনে না ধরলে দেশ অচিরেই দেউলিয়া হয়ে যাবে।
ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সির উপদেষ্টা ইলন মাস্ক বলেন, ‘আমার দপ্তরের প্রধান কাজ দেশের চলমান অর্থ সংকট ও বাজেট ঘাটতির তথ্য উপস্থাপন করা। একটি দেশ ২ ট্রিলিয়ন ডলার ঋণের বোঝা বইবে এটা মেনে নিতে পারছি না। সুদের হার শুধু জাতীয় ঋণের সুদ এখন প্রতিরক্ষা বিভাগের ব্যয়কে ছাড়িয়ে গেছে।’
যদিও রয়টার্স বলছে, ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম মাসেই, গেল প্রশাসনের তুলনায় ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যয় বেড়েছে ১৩ শতাংশ। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে জাতীয় ঋণের চড়া সুদ আর ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য ও অবসর ভাতার অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হচ্ছে ট্রাম্পকে।
মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেও বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে বিস্ফোরক ট্রাম্প। বলেন, খুব তাড়াতাড়ি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রের পণ্যে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করা হবে। এছাড়াও, কানাডা ও মেক্সিকোর সব পণ্যে শুল্ক না বসালেও, অধিকাংশ পণ্যেই শুল্কারোপের সিদ্ধান্তের কথা ট্রাম্পের।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি। দ্রুতই তা জানানো হবে। বৈদ্যুতিক গাড়িসহ বেশ কিছু পণ্যে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসানোর পরিকল্পনা আছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডা এক জিনিস না। ইইউ আলাদা সমস্যা। তারা বিভিন্নভাবে আমাদের দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে।’
এর আগে, মার্কিন নাগরিকত্ব অর্জনে ৫০ লাখ ডলারের গোল্ড কার্ড ভিসা চালুর ঘোষণা দেন ট্রাম্প। কিন্তু এ নিয়েও শুরু হয় বিতর্ক। মন্ত্রিসভার বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, এই ভিসা সীমিত সংখ্যক অভিবাসন প্রত্যাশীর জন্য। বিশেষ করে যে সব প্রতিষ্ঠান দক্ষ জনশক্তি ব্যবহার করতে চায়, তারা এই ভিসার সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে। পাশাপাশি এই ভিসা থেকে যে অর্থ পাওয়া যাবে তা জাতীয় ঋণ পরিশোধে ব্যয় করার পরিকল্পনা আছে বর্তমান প্রশাসনের।
এদিকে, আটকে থাকা বৈদেশিক সহায়তা প্যাকেজের ২০০ কোটি ডলার পরিশোধে ট্রাম্প প্রশাসনকে যে সময় বেধে দেয়া হয়েছিল তা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন আদালত। এর আগে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আপাতত এই অর্থ ছেড়ে দেয়ার সক্ষমতা নেই তাদের।