চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক অভাবনীয় মাইক্রো রোবট আবিষ্কার করলেন ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি বা ক্যালটেক-এর একদল বিজ্ঞানী। গবেষক দলের দাবি, ক্ষুদ্র এই রোবট দিয়ে টিউমার কিংবা ক্যান্সারের চিকিৎসায় মানবদেহের ভেতরে নির্ভুল অস্ত্রোপচার বা সুনির্দিষ্ট জায়গায় ওষুধ প্রয়োগ সম্ভব, যা চিকিৎসকদের জন্য খালি হাতে করা দুরূহ ব্যাপার।
এই মাইক্রো রোবট ডায়াক্রিলেট নামে পরিচিত একটি হাইড্রোজেন থেকে তৈরি। যা রক্ত, প্রস্রাবের মতো মানবদেহের তরল পদার্থে কাজ করতে সক্ষম। সেই সঙ্গে শুধু লক্ষ্যে পৌঁছানোর পরেই সেখানে ওষুধ প্রয়োগ বা অস্ত্রোপচার করতে পারবে বলে জানান গবেষকেরা।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালটেক মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ অধ্যাপক ওয়েই গাও বলেন, ‘দুটি ফোটন পলিমারাইজেশন ব্যবহার করে এই মাইক্রো রোবটটি তৈরি করেছি। যা শরীরের ভেতরকার জটিল পরিবেশেও অত্যন্ত দক্ষতার সাথে চলতে পারবে। এর মাধ্যমে মানুষের রক্ত, প্রস্রাব, জিআই বা গ্যাস্ট্রো-অন্ত্রে চলাচল করতে পারবে।’
এরই মধ্যে মূত্রথলিতে টিউমার আছে এমন ইঁদুরে মাইক্রো রোবটগুলোর পরীক্ষা চালানোর হয়েছে। মাইক্রো রোবট দিয়ে ২১ দিনের মধ্যে ৪ বার নির্দিষ্ট স্থানে প্রয়োগ করা হয়েছে থেরাপির ওষুধও। টিউমারটি সারিয়ে তুলতে এর ফলাফল বেশ কার্যকর ছিল বলে দাবি বিজ্ঞানীদের।
ওয়েই গাও বলেন, ‘আমরা এর মাধ্যমে মূত্রথলিতে ক্যান্সার আছে এমন ইঁদুরে ওষুধ প্রয়োগ করেছি। যা বিশ্বে বাস্তব অর্থেই নতুন।’
ঠিক কোন কোন চিকিৎসায়, কোথায় এই মাইক্রো রোবটগুলো দিয়ে ওষুধ প্রয়োগ সম্ভব হবে, তা নিয়ে এখনও গবেষণা চলমান। পূর্ণ সফলতা পেতে, মানুষের উপরও ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পরিচালনার লক্ষ্যে এগুচ্ছেন উদ্ভাবকরা।
জটিল রোগের চিকিৎসায় সম্ভাবনাময় একটি মাইক্রো রোবটের আকার মানুষের চুলের প্রস্থের চেয়েও ছোট। অর্থাৎ বৃত্তের ব্যাসের দিক দিয়ে যা প্রায় ৩০ মাইক্রোমিটার। একবার কাজ শেষে কোনো ক্ষতি ছাড়াই শরীরে শোষিত হতে সক্ষম মাইক্রো রোবটগুলো।