ট্রাম্পের সাথে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে ফোনালাপ শেষে সীমান্তের হালচাল জানতে বৃহস্পতিবার এভাবেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। ভিডিও লিংকে ব্রায়ানস্ক অঞ্চলের গভর্নরের সাথে দীর্ঘ আলাপে উঠে আসে যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত রুশ বাসিন্দাদের পুনর্বাসন প্রসঙ্গও।
ট্রাম্প ম্যাজিকে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনা রুশ গণমাধ্যম ফলাও করে প্রচার করছে পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে জয়ী হয়েছেন পুতিন। তাদের দাবি, ইউরোপের নেতারা অস্বীকার করলেও ইউক্রেনের হয়ে প্রক্সি যুদ্ধে নেমেছিল পশ্চিমা বিশ্ব। কাজেই ট্রাম্পের এই ফোন কল ইঙ্গিত দেয়, ইউরোপ পরোক্ষভাবেও হলেও আর যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায় না।
কৃতিত্ব ভাগাভাগির খেলায় না গিয়ে ট্রাম্প ও পুতিনের ফোনালাপকে 'শিক্ষিত ও বিনয়ী' দুই রাষ্ট্রপ্রধানের কথোপকথন হিসেবে উল্লেখ করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের পরিকল্পনা হাতে পেয়ে মুগ্ধতা প্রকাশ করেছে ক্রেমলিন। মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ, ‘আমি অবাক হয়েছি। যখন পুরো বিশ্ব দিকভ্রান্ত তখন ট্রাম্প-পুতিনের ফোনালাপকে ঐতিহাসিক একটি ঘটনা হিসেবে স্বীকার করছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। সম্ভবত দুই শিক্ষিত রাষ্ট্রপ্রধানের ফোনালাপের খবরে পশ্চিমা বিশ্ব ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা স্তব্ধ হয়ে গেছে।’
পুতিন ট্রাম্পের আলোচনাকে স্বাগত জানিয়েছে চীন। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে গঠনমূলক যে কোনো সমাধানে শি জিনপিংয়ের সমর্থন আছে বলে মন্তব্য চীনা পররাষ্ট্র দপ্তরের।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, ইউক্রেনের জেলেনেস্কি আর রাশিয়ার পুতিনকে একই দিনে ফোন করে চলমান যুদ্ধ বন্ধের একটি বাস্তবসম্মত সূচনা করেছেন ট্রাম্প।
ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলসের অধ্যাপক আলেকজান্ডার করোলেভ বলেন, ‘দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর শুরুটা ভালো হয়েছে। একই সাথে যুদ্ধ বন্ধের আলোচনার খুবই বাস্তবসম্মত সূচনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া তো আলোচনা করবেই। তবে, এখন ইউক্রেন ও ইউরোপের নেতাদের এই আলোচনায় ভূমিকা রাখার সময় এসেছে।
এদিকে, প্রতিরক্ষা বাজেট, অস্ত্র উৎপাদন ও রাশিয়ার ঝুঁকিসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করতে বৃহস্পতিবার বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে জড়ো হয়েছেন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা। এদিন, রুশ সেনাবাহিনীর আগ্রাসন প্রতিরোধের রাখার পাশাপাশি অতিরিক্ত পশ্চিমা সামরিক সহায়তা অর্জনের বিষয়ে আশাবাদ জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী।