দক্ষিণ কোরিয়ার বন্দরনগরী বুসানের তীরে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ভিড়েছে ইউএসএস আলেকজান্দ্রিয়া। তড়িৎগতিতে আক্রমণের সক্ষমতা সম্পন্ন পারমাণবিক ডুবোজাহাজটির অস্ত্রভাণ্ডারে রয়েছে টমাহক ক্রুজ মিসাইল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহরের অংশ এই ডুবোজাহাজটি।
অত্যাধুনিক মার্কিন ডুবোজাহাজটির বুসানে নোঙর ফেলার কারণ হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়া বলছে, নাবিকদের বিশ্রাম এবং প্রয়োজনীয় রসদের জোগান। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরো জানায়, এর মাধ্যমে তথ্য বিনিময় এবং সমন্বিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দাঁড় করানোরও সুযোগ পাবে দুই দেশের নৌবাহিনী। আর এতেই চটেছে উত্তর কোরিয়া।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ আজ (মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি) দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, কোরীয় উপদ্বীপে মার্কিন পারমাণবিক ডুবোজাহাজের উপস্থিতি যুদ্ধবাজ যুক্তরাষ্ট্রের উন্মাদনার স্পষ্ট বহি:প্রকাশ। যুক্তরাষ্ট্রের বিপজ্জনক ও শত্রুতাপূর্ণ সামরিক এ আচরণ কোরীয় উপদ্বীপে বড় ধরনের সামরিক সংঘাত এবং সত্যিকারের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ উসকে দেবে বলেও অভিযোগ পিয়ংইয়ংয়ের।
আন্ত:কোরিয়া বিশেষজ্ঞ ইয়াং মু-জিন বলেন, ‘আন্তঃকোরীয় সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক হিসেবেই দেখছে উত্তর কোরিয়া।’
উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত থেকে মাত্র ১৬ মাইল দূরে দফায় দফায় সামরিক মহড়ার জেরে গেল রোববারও যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে সংঘাত উসকে দেয়ার অভিযোগ করে পিয়ংইয়ং।
গেল মাসে দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের সাথে সরাসরি আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত এতে সাড়া দেয়নি কিম প্রশাসন।
পিয়ংইয়ংয়ের ওপর ওয়াশিংটনের গুরুতর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ট্রাম্পের বিগত মেয়াদে দুপক্ষের বৈরিতা নিরসনের বিরল উদ্যোগের সাক্ষী হয়েছিল বিশ্ব। ২০১৮ ও ১৯ সালে তিনবার দেখা করেছিলেন দুই নেতা; কোরীয় যুদ্ধে ইতি টানতে ১৯৫৩ সালের অস্ত্র বিরতি কার্যকরের পর ছয় দশকে প্রথম ক্ষমতাসীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে উত্তর কোরিয়ার মাটিতে পা ফেলেছিলেন ট্রাম্প।