বিদেশে এখন
0

ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার ৪০ বছর পর বিপজ্জনক বর্জ্য সরানোর প্রক্রিয়া শুরু

অবশেষে মুক্তি। ভয়াবহ ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার ৪০ বছর পর, ইউনিয়ন কার্বাইড কারখানার সাইট থেকে সরানো হলো ৩৩৭ টন বিপজ্জনক বর্জ্য। ভোপাল থেকে মধ্যপ্রদেশের সেহর, সেখান থেকে দেওয়াস এবং অবশেষ এসব বর্জ্য নিয়ে যাওয়া হয় পিথমপুরে। সেখানেই চলছে বর্জ্য ধ্বংস কার্যক্রম। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে, তিন মাসের মধ্যে বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলা হবে। অন্যথায় সময় লাগতে পারে অন্তত নয় মাস।

ভোপাল এক্সপ্রেস থেকে রেলওয়ে ম্যান। ১৯৮৪ সালে ভারতের মধ্যপ্রদেশের ভোপালে ভয়াবহ গ্যাস লিকেজের সত্য ঘটনা পর্দায় ফুটিয়ে তোলা হয় সিনেমা ও ওয়েব সিরিজের মাধ্যমে।

মানুষের আর্ত-চিৎকার, জীবন বাঁচানোর লড়াই ও মৃত্যু। টান টান উত্তেজনা ক্ষণিকের জন্য হলেও দর্শকদের মনে করিয়ে দেয় ভোপালের ১৯৮৪ সালের ভয়াবহ সেই রেলস্টেশনের কথা। দুর্ঘটনায় কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হলেও নিজের জীবন দিয়ে হাজারও মানুষের প্রাণ বাঁচিয়ে ইতিহাসের পাতায় আজীবন অমর হয়ে থাকবেন স্টেশন মাস্টার গোলাম দস্তগীর।

ভোপালের ইউনিয়ন কার্বাইড কারখানার সেই দুর্ঘটনা আজও রক্ত হিম করে দেয় অনেকের। সেই বিভীষিকাময় রাতের প্রায় ৪০ বছর পর অবশেষে সরানো হলো বিষাক্ত সেই বর্জ্য। যদিও এখনও এই কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগ জানাচ্ছে পরিবেশবিদ ও অ্যাক্টিভিস্টরা।

ইউনিয়ন কার্বাইড কারখানার যে ৩৩৭ মেট্রিক টন বিষাক্ত বর্জ্যের কথা বলা হচ্ছে তা আসলে মোট বর্জ্যের মাত্র এক শতাংশ। যার কারণে, আজও ৪২টি বস্তির ভূগর্ভস্থ পানি দূষিত হয়েছে। এখনও বিষাক্ত বর্জ্য রয়েছে। কারখানার ২১টি জায়গা এবং বাইরের পুকুরে বর্জ্য পুঁতে রাখা হয়েছে।

এদিকে ভোপাল পুলিশ কমিশনার জানান, সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বজায় রেখে সরানো হয়েছে বর্জ্য। কঠোর নিরাপত্তায় বর্জ্য পদার্থগুলো নিয়ে যাওয়া হয় ২৫০ কিলোমিটার দূরের শহর ইন্দোরের কাছে অবস্থিত পিথমপুরে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্জ্যের কিছু অংশ পিথমপুরে নির্দিষ্ট জায়গায় পুড়িয়ে ফেলা হবে। তারপর সেটির ছাই পরীক্ষা করে দেখা হবে আর কোনো ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে কি না। সব ঠিক থাকলে এই কার্যক্রম শেষ হতে সময় লাগবে তিন মাস। আর ধীরগতিতে হলে লেগে যেতে পারে অন্তত ৯ মাস।

১৯৮৪ সালের ২ ডিসেম্বর ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনায় সরকারি হিসেব মারা যান ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ। যদিও বেসরকারি হিসেবে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। দুর্ঘটনার প্রভাবে শারীরিক ক্ষতি হয় অন্তত পাঁচ লাখ মানুষের। এরপর থেকেই পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে কারখানাটি। যদিও ৪০ বছর আগের সেই গ্যাস দুর্ঘটনার ফলে এখনও ভুগছে ভোপাল। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে অব্যাহত রয়েছে বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাব।

ইএ