একেতো হাঁড় কাঁপানো শীত, তার ওপর মাত্রাতিরিক্ত বায়ুদূষণ। যতদূর চোখ যায় কেবলই ঘন কুয়াশা। দৃষ্টিসীমার মধ্যে নেই মানুষ কিংবা যানবাহন।
গেল কয়েকদিনের চরম বায়ুদূষণের পাশাপাশি শীতের কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিলম্ব হয়েছে দুই শতাধিক ফ্লাইট। অনেক এলাকা কুয়াশার কারণে দেখাই যাচ্ছে না।
বিলম্ব হয়েছে স্পাইস জেট, ইন্ডিগো আর এয়ার ইন্ডিয়ার দিল্লি, অমৃতসর, গুয়াহাটি, লক্ষ্ণৌ আর বেঙ্গালুরুর ফ্লাইট। ব্যাহত হচ্ছে ট্রেন চলাচলও। আগামী কয়েকদিন ঘন কুয়াশা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। কয়েকদিন দেখা নাও মিলতে পারে সূর্যের। সোমবার হতে পারে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত। সাধারণ সময়ের মতো এখনও দিল্লির বায়ুমান নিচের দিকে।
এদিকে শীতে ভয়াবহ পরিস্থিতি ভারতের উত্তর পশ্চিমাঞ্চল আর মধ্যাঞ্চলেও। জম্মু কাশ্মীর আর লাদাখে তাপমাত্রা নেমে যাচ্ছে শূন্যের কাছাকাছি। ৪ থেকে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে ঝাড়খান্ডের তাপমাত্রা। পূর্বাঞ্চলের অনেক স্থানে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে ১৪ থেকে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে জম্মু, কাশ্মীর, লাদাখ, গিলগিত বালতিস্তান, হিমাচল প্রদেশ, গুজরাট ও রাজস্থানে। হিমালয় সংলগ্ন অনেক স্থানে হচ্ছে তুষারপাত।
কনকনে ঠাণ্ডায় বিপর্যস্ত ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের জনজীবন। সাধারণ মানুষ একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। যারা বের হতে বাধ্য হচ্ছেন, তারাও পড়ছেন চরম বিপাকে। খেটে খাওয়া মানুষের ভোগান্তিও এখন চরমে। ছিন্নমূল মানুষ রাস্তার ধারে আগুন জ্বালিয়ে নিচ্ছেন উষ্ণতা। শুক্রবার আরও নামতে পারে নয়াদিল্লির তাপমাত্রা।
এর আগে গেলো মাসেই ভয়াবহ বায়ুদূষণের কবলে পড়ে গোটা দিল্লি। বায়ুমান চলে যায় বিপজ্জনক অবস্থায়। রাজধানী নয়াদিল্লিতে প্রতিবছর শীতেই বায়ুদূষণ বাড়ার কারণ কার্বন নিঃসরণ, অবকাঠামো খাত থেকে আসা ধুলোবালি, আর পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশে বিভিন্ন কারখানা থেকে নিসৃত ধোয়া।
এদিকে ভিয়েতনামের হ্যানয়'তেও বাযুমান ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছেছে। দূষণের কারণে দেখা যাচ্ছে না কিছুই। সাধারণ মানুষের ফুসফুসজনিত রোগের সংক্রমণ বাড়ছে। অনেকেই রাস্তায় বের হয়ে শ্বাস নিতে পারছেন না। বায়ুদূষণের কারণে কয়েক লেয়ারের মাস্ক পড়েও রক্ষা পাচ্ছেন না মানুষ।