প্রায় তিন বছর হতে চললেও ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনা অভিযান বন্ধের নেই কোনো আভাস। উল্টো যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত করতে এবার আসন্ন শীত মৌসুমের আগেই রুশ সেনাবাহিনীতে যুক্ত হচ্ছেন আরও ১ লাখ ৩৩ হাজার সদস্য। পহেলা অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে এই প্রক্রিয়া চলবে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ সংক্রান্ত জারি করা একটি ডিক্রিতে বলা হয়, দেশের ১৮ থেকে ৩০ বছরের নাগরিকরা রাষ্ট্রীয় নীতি অনুযায়ী যুক্ত হবেন রুশ সামরিক বাহিনীতে।
রুশ নিয়োগ কার্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, এই নিয়োগের মধ্য দিয়ে বাধ্যতামূলকভাবে দেশের সেনাবাহিনীতে কাজ করতে হবে এক বছর। নতুন এই সেনা সদস্যরা ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিলেও, নতুন অঞ্চলগুলোতে বিশেষ সেনা অভিযানে তাদের অংশ নিতে হবে না। পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ থেকে হুমকি পেয়ে সেপ্টেম্বরে রুশ প্রেসিডেন্ট নির্দেশ দেন, দেশের সেনাবাহিনীতে যুক্ত হচ্ছে আরও ১ লাখ ৮০ হাজার সেনা। এরমধ্য দিয়ে চীনের পর সেনাসদস্যের দিক দিয়ে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকবে রাশিয়া।
এদিকে একইসঙ্গে নিজেদের প্রতিরক্ষা খাতেও বাজেট বাড়াচ্ছে রুশ প্রশাসন। ২০২৫ সালের জন্য প্রতিরক্ষা বাজেটে বরাদ্দ বাড়ছে ১৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের ওপরে। ২০২৫ সালে মোট সরকারি ব্যয়ের ৩২ শতাংশই হবে প্রতিরক্ষা খাতে। অথচ ২০২২ সালে এর আকার ছিল ৫ হাজার ৯শ' কোটি ডলার। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সামরিক খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে ইউক্রেনে সেনা অভিযান আরও দীর্ঘায়িত করবে মস্কো। অথচ দেশটিতে অন্যান্য খাতে ক্রমশ কমছে বরাদ্দ।
এদিকে ইউক্রেনে পুরোদমে সেনা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা দিয়েছেন, পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের নীতিমালায় আসবে পরিবর্তন। এই ঘোষণায় চটে গিয়ে বিদায়ী ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গ বলেছেন, এই পদক্ষেপ বেপরোয়া। তিনি বলেন, রাশিয়া যতই পদক্ষেপ নিক না কেন, ইউক্রেনের প্রতি ন্যাটোর সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে থাকবে।
ন্যাটো প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ বলেন, 'রুশ প্রেসিডেন্ট যদি জিতে যান, নিজের সামরিক বাহিনীকে কোথায় ব্যবহার করবেন সেটাই প্রশ্ন। ন্যাটোকে আগেও পুতিন হুমকি দিয়েছেন তিনি সবাইকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ফেলে দেবেন। তবে আমাদের বিরুদ্ধে পরমাণু যুদ্ধে জিততে পারবেন না পুতিন। কারণ মিত্র দেশগুলোর সুরক্ষায় সব পদক্ষেপ আমরা নিবো।'
এমন অবস্থায় ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার তীব্রতা বাড়ানোয় কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে যাচ্ছে কিয়েভ।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে পড়ছে। ফলে আগামী দিনে আরও বেশি করে পশ্চিমা সহযোগিতা প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।