উপকূলে আছড়ে পড়ছে ঢেউ, সমুদ্রের পানি ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে। হারিকেন ইডালিয়ার রেশ কাটতে না কাটতেই আরেকটি শক্তিশালী হারিকেন হেলেনের তাণ্ডব দেখলো যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডাবাসী।
বৃহস্পতিবার ( ২৬ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ১১ টার কিছু পরে এভাবেই ফ্লোরিডার গালফ উপকূলের বিগ বেন্ড অঞ্চলে ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে হারিকেন হেলেন।
মায়ামিতে অবস্থিত ন্যাশনাল হ্যারিকেন সেন্টারের তথ্য বলছে, গেল বছর ফ্লোরিডার যে উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে হারিকেন ইডালিয়া আঘাত হেনেছিল, সেখান থেকে মাত্র ৩২ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে তাণ্ডব চালায় হেলেন। সড়ক ও রেলপথ তলিয়ে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন ফ্লোরিডার যোগাযোগ ব্যবস্থা।
রানওয়েতে পানি ঢুকে পড়ায় বন্ধ আছে বিমান চলাচল। যদিও, আঘাত হানার পর ক্যাটাগরি ৪ থেকে ক্যাটাগরি দুইয়ে পরিণত হয়েছে হারিকেনটি। তবে, ঝড়ের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো বাতাস অব্যাহত থাকায় ৬টি অঙ্গরাজ্যে জারি রয়েছে জরুরি অবস্থা। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পর্যটকসহ স্থানীয়দের উপকূলীয় অঞ্চল এড়িয়ে চলার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘আমি মায়ামিতে একটি নৌকায় ছিলাম। তুর্কস ও কেকস ছেড়ে অনেকদূর চলে আসি। হারিকেনের খবর পাওয়ার সাথে সাথে মায়ামিতে ফিরে এসেছি। একটা সময় দুশ্চিন্তা হচ্ছিল, আমরা উপকূলে ফিরতে পারবো তো! এটা সত্যই ভয়াবহ অনুভূতি।’
হারিকেনের তাণ্ডবে ফ্লোরিডায় বিদ্যৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে ১৩ লাখ বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। জর্জিয়ায় সাড়ে ৪ লাখ, সাউথ ক্যারোলাইনায় ৬৭ হাজার ও নর্থ ক্যারোলাইনায় বিদ্যুৎহীন অবস্থায় দিন পার করেছেন অন্তত ২০ হাজার বাসিন্দা। এর আগে, স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করে সবধরণের প্রতিকূলতা মোকাবিলার আশ্বাস দেন ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস।
ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস বলেন, ‘রাতের অন্ধকারে বাইরে কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। আপনি জানেন না বাইরে কী অপেক্ষা করছে। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে, যদিও গভীর রাতে এসব পর্যবেক্ষণ করা অত্যন্ত কঠিন।’
হারিকেন হেলেনের প্রভাবে জর্জিয়ার উত্তরাঞ্চল ও নর্থ ক্যারোলাইনার পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকাগুলোতে বন্যা সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর। এছাড়াও, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, আলাবামা, নর্থ ও সাউথ ক্যারোলাইনা এবং ভার্জিনিয়ায় জারি আছে জরুরি অবস্থা।