গেল জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেও আততায়ীর গুলি এড়াতে পারেননি। মাথা লক্ষ্য করে ছোঁড়া গুলিটি কানের উপরিভাগ ছিদ্র করে বেরিয়ে গিয়েছিল। পেনসিলভেনিয়ায় নির্বাচনী সমাবেশে ২০ বছর বয়সী হামলাকারী স্নাইপার হামলায় নিহত হয় ঘটনাস্থলেই।
প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের কোনো প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে লক্ষ্য করে হামলার ঘটনা ছাড়াই কয়েক দশক পার করে, চলতি বছর দুই মাসের ব্যবধানে দু'বার এ ধরনের ঘটনার সাক্ষী হলো যুক্তরাষ্ট্রবাসী। দুই হত্যাচেষ্টায় লক্ষ্য একজন, প্রথম হামলার রহস্যভেদের আগেই দ্বিতীয় হত্যাচেষ্টার শিকার রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা পরামর্শক ও সাবেক সিক্রেট সার্ভিস এজেন্ট জেসন রাসেল বলেন, ‘আমি বিস্মিত। এ ধরনের ঘটনা ছাড়াই দীর্ঘ সময় পেরিয়ে এসে দুই মাসের মধ্যে দু'টি হামলা, এটা বিস্ময়করই বটে।’
প্রথম হামলার পরই জোরদার করা হয় ট্রাম্পের নিরাপত্তা। ট্রাম্প অক্ষত থাকতে থাকতেই সন্দেহভাজনকে শনাক্ত ও দ্রুত আটক করতে পারায় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থার ফলও মিলেছে, এমন মত নিরাপত্তাবিদদের।
জেসন রাসেল বলেন, ‘পেনসিলভেনিয়ার ঘটনায় স্পষ্টভাবেই যোগাযোগের ব্যর্থতা ছিল। এবারও বিষয়টিকে অনেকটা তেমনই ধরে নেয়া হচ্ছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে এবার আসলে ঘটনা তা নয়। সুরক্ষা ব্যবস্থার ফল মিলেছে বলে আমি মনে করি।’
তবে প্রশ্ন উঠছে, মার্কিন রাজনীতিতে এটি সহিংসতার নতুন অধ্যায়ের সূচনা কি-না। জাতীয় পর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্র সহিংসতার মহামারি চলতে থাকার মধ্যেই এ ধরনের হামলা নতুন স্বাভাবিক ঘটনায় রূপ নিচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে। পশ্চিমা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বলছে, হত্যাচেষ্টার বিস্তারিত অর্থাৎ হামলাকারীর পরিচয়, বিশেষ করে হামলার উদ্দেশ্য নির্ধারণ করবে মার্কিন রাজনীতিতে ট্রাম্পের ওপর রোববারের হামলার প্রভাব। কিন্তু তার আগ পর্যন্ত আপাতদৃষ্টিতে রাজনৈতিক সহিংসতার নিয়মিত চিত্র হয়ে উঠছে যুক্তরাষ্ট্রে।
যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান স্ট্র্যাটেজিস্ট জেমস ডেভিস বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এটা মনে হচ্ছে যে এটাই নতুন স্বাভাবিক, কিন্তু আমি আশা করছি যে বিষয়টা এমন নয়। আমি আশা করছি যে পরিস্থিতির নতুনত্বে আমাদের এমনটা মনে হচ্ছে। তবে উগ্র জাতিবাদ যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে নৈরাজ্যের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ এরা এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়।’
এদিকে, গেল সপ্তাহে প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিসের সঙ্গে প্রথম বিতর্কে ট্রাম্পের দৃশ্যমান পরাজয়ের পর ভোটারদের সহানুভূতি পেতে ট্রাম্প শিবিরই এ হামলার ছক সাজিয়েছে কি না, উঠছে সে প্রশ্নও। যদিও, বিতর্কপরবর্তী জরিপে দু'পক্ষে সমর্থনে তেমন পরিবর্তন ধরা পড়েনি।