জাতিগত দ্বন্দ্বে বিক্ষোভে উত্তাল ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুর। সাম্প্রতিক সময়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ড্রোন আর ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় হতাহতের ঘটনার পর নতুন করে সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে এই রাজ্যে। দফায় দফায় বৈঠকে বসেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নিতে পারছে না রাজ্য সরকার।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানী ইমফালে সচিবালয় আর রাজ ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী। এসময় চলমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন তারা। বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সঙ্গে ঘটে সংঘর্ষের ঘটনা। এরপর তারা মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিং ও গভর্নর এল আচর্য্যের সঙ্গে দেখা করে ছয় দফা দাবি তোলেন।
ন্যায়বিচার এবং রাজ্যের অখন্ডতা রক্ষার স্বার্থে ড্রোন আর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি সব বিধায়ক, পুলিশ মহাপরিচালক ও নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি তাদের দাবি তোলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একচ্ছত্র আধিপত্যকে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে হস্তান্তরের। অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে রাজ্যে ৯ এবং ১০ সেপ্টেম্বর বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে স্কুল।
এদিকে, সংঘাত-সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হওয়ায় বিজেপি নিয়ন্ত্রিত রাজ্য সরকার আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কড়া সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট মল্লিকার্জুন খাড়গে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিংয়ের পদত্যাগ দাবি করেন তিনি। জাতিগত সংঘাত নিরসনে ব্যর্থতা মোদি সরকার ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে জাতিগত সংঘাতে মেইতেই আর কুকি জো সম্প্রদায়ের ৯ জন নিহত হয়েছে ড্রোন ও বন্দুক হামলায়। এরপর থেকেই নতুন করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে মণিপুরে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কুকি জো বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ছুড়েছে এই ড্রোন। ২০২৩ সালের মে মাসে সর্বপ্রথম শুরু হয় কুকি জো আর মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে জাতিগত সংঘাত। এখন পর্যন্ত এই সংঘাতে ২ শতাধিক মৃত্যু ও ৬০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।