থার্মাইট নামে পরিচিত অ্যালুমিনিয়াম গুঁড়া ও আয়রন অক্সাইডের উত্তপ্ত মিশ্রণ ব্যবহার করা হয় ড্রাগন ড্রোনে। থার্মাইট ধাতব পদার্থসহ যেকোনো জিনিস খুব সহজেই পোড়াতে পারে। এটি ২ হাজার ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পুড়তে থাকে। ১৮৯০ সালে জার্মান এক রসায়নবিদ থার্মাইট আবিষ্কার করেন। তখন সেটি রেলপথ ঢালাইয়ের কাজে ব্যবহার করা হতো। পরে সামরিক কাজেও এর ব্যবহার শুরু হয়।
ড্রাগন ড্রোন মূলত পুরোনো যুদ্ধাস্ত্রের নতুর রূপ। পৌরাণিক কাহিনির ড্রাগনের মতো মুখ দিয়ে আগুন ঝরে এই ড্রোন দিয়ে। তাই এর নাম দেওয়া হয়েছে ড্রাগন ড্রোন। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানি ও তার মিত্ররা এর মাধ্যমে শত্রুদের অস্ত্র গলিয়ে ফেলত। তবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর, সম্প্রতি রুশ ট্যাঙ্ক অচল করার কাজে এটি ব্যবহার শুরু করেছে ইউক্রেন।
নিখুঁত টার্গেট ও প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এড়ানোর সক্ষমতার জন্য আধুনিক যুদ্ধের কার্যকর হাতিয়ার হয়ে উঠেছে ড্রাগন ড্রোন। এ থেকে সুরক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। রুশ বাহিনীর গোপন আস্তানা ও তাদের অঞ্চল পুড়িয়ে দিতে এই ড্রোন দিয়ে হামলা চালাচ্ছে ইউক্রেন সেনারা। ১৯৬০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এই ড্রোন ব্যবহার করে মার্কিন সামরিক বাহিনী। মাঝে এর ব্যবহার বন্ধ থাকলেও, ২০২৩ সালে ফের উৎপাদন শুরু হয়।
সামরিক যুদ্ধ ক্ষেত্রে ড্রাগন ড্রোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও, বেসামরিক কোনো লক্ষ্যবস্তুর ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আছে। জাতিসংঘ বলছে, এ ধরনের অস্ত্র মানুষের শরীর ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। ড্রাগন ড্রোনের প্রভাবে মানুষের পেশী, স্নায়ু, রক্তনালী এমনকি হাড়েরও ক্ষতি হতে পারে।
মূলত শত্রুপক্ষের মধ্যে ভয় সৃষ্টিতে এই ড্রোনের ব্যবহার বেশ কার্যকরী। ইতোমধ্যে ছোট থেকে শুরু করে বড় আকারের নানা ড্রোন দিয়ে নিজেদের রক্ষা করছে ইউক্রেন। এবার নতুন ড্রাগন ড্রোন দিয়ে রুশ বাহিনীকে কাবু করার চেষ্টায় তৎপর তারা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যুদ্ধক্ষেত্রের চিত্র পাল্টাতে না পারলেও, ড্রাগন ড্রোন দিয়ে রুশ সেনাদের বেশ ভালভাবেই চাপে রেখেছে ইউক্রেন বাহিনী।