সরকার বিরোধী আন্দোলনের হাওয়া বইতে শুরু করছে দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ পাকিস্তানে। নানা ইস্যুতে প্রায় প্রতিদিনই দেশটির গুরুত্বপূর্ণ শহরে চলছে বিক্ষোভ। বিশেষ করে ইমরান খানের দল তেহেরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআই- সরকার পতনের ডাক দেয়ার নড়েচড়ে বসেছে শাহবাজ শরীফের সরকার। পিটিআই নেতা ইমরান খানকে মুক্তি না দিলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দলের নেতাকর্মীরা।
চলমান এই অস্থিরতার মধ্যে আগুনে ঘি ঢালতে এসেছে বেলুচিস্তানে চীনের অর্থায়নে বিমানবন্দর উদ্বোধনের খবর। বন্দর নগরী বেলুচিস্তানের গাওয়াদার প্রদেশে অবস্থিত এই বিমানবন্দরের কাজ এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। তবে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ট করে এ ধরণের প্রকল্প নির্মাণের বিরোধিতা করেছেন স্থানীয়রা। এর আগে, মাল্টি বিলিয়ন-ডলার চায়না-পাকিস্তান ইকোনোমিক করিডোর' প্রকল্পের আওতায় নির্মিত বিমানবন্দর নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল বেলুচিস্তানসহ পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটি প্রদেশ। ফলে, এয়ারপোর্ট উদ্বোধনের খবর প্রকাশের পরপর সরকার বিরোধী আন্দোলন আরও কিছুটা বেগবান হল।
পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে দেশজুড়ে ইন্টারনেটের গতি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান সরকার। এরআগে নির্বাচনের সময় সামাজিক মাধ্যম এক্স বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। সে নিষেধাজ্ঞা এখনও জারি থাকলেও ভিপিএন ব্যবহার করে এক্স ব্যবহার করছে দেশটির জনগন। তখন থেকেই পাকিস্তানের বাক স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে।
ইন্টারনেট বিভ্রাট ও জনরোষের মধ্যে আবারও একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে শেহবাজ শরীফের সরকার। বৃহস্পতিবার জিও নিউজ জানায়, ডিজিটার প্ল্যাটফর্মের অচলাবস্থা ও ইন্টারনেট শাট ডাউনের মধ্যেই বহুল সমালোচিত ফায়ারওয়ালের দ্বিতীয় ট্রায়াল সম্পন্ন করেছে দেশটির টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর।
ইন্টারনেট ফায়ারওয়াল হচ্ছে একটি নেটওয়ার্ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা যা পূর্বনির্ধারিত নিয়মের ভিত্তিতে ইনকামিং এবং আউটগোয়িং নেটওয়ার্ক ট্রাফিক নিরীক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করে। সাধারণত একটি বিশ্বস্ত নেটওয়ার্ক এবং একটি অবিশ্বস্ত নেটওয়ার্কের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করাই এর প্রধান কাজ। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার স্বার্থে এই ফায়ারওয়াল চালু করার ঘোষণা দেয়া হলেও, এটি মূলত জনগনের ওপর নজরদারি বাড়ানোর একটি রাজনৈতিক কৌশল বলে মনে করছেন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা।