ইতালির পুগলিতে বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে পশ্চিমা শক্তিশালী সাতটি দেশের জোট জি-সেভেনের ৫০তম সম্মেলন। যেখানে প্রথম দিনের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। মস্কোর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে সবাই মিলে ইউক্রেনকে কি কি সুবিধা দেয়া যায় তা নিয়েই ব্যস্ত ছিল আয়োজক দেশ ইতালিসহ জোটের নেতারা।
অবশেষ সুখবর পেল ইউক্রেন। কারণ তাদের ৫ হাজার কোটি ডলার ঋণ দিতে একটি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে জি-সেভেন। ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরুর পর জব্দ করা ৩২ হাজার ৫শ' কোটি ডলার মূল্যের রাশিয়ার সম্পদের সুদ থেকে এই অর্থ দেয়া হবে ইউক্রেনকে। যা রাশিয়ার জন্য এটি কঠোর বার্তা বলে সতর্ক করেছেন ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন।
উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেন, 'আমরা ইউক্রেনের স্বাধীনতার লড়াইয়ে যতদিন সময় লাগবে সমর্থন করব। এটি পুতিনের জন্য একটি কঠোর বার্তা। পুতিন কখনোই আমাদেরকে ছাড়িয়ে যেতে পারবেন না।'
অন্যদিকে জার্মান চ্যান্সেলর বলেছেন, ঋণ দেয়ার এই বিষয়টি তাদের দৃঢ় প্রতিশ্রুতির অংশ। যা ইউক্রেনীয়দের সাহস যোগাবে। এমনকি যুদ্ধে রাশিয়ার বিজয়ের স্বপ্নও মিথ্যা হবে।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ বলেন, 'এটি একটি অত্যন্ত দৃঢ় প্রতিশ্রুতি। যা ইউক্রেনের জনগণকে তাদের স্বাধীনতা এবং তাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এখন যা প্রয়োজন তা করার সাহস যোগাবে। এমনকি এটি রুশ প্রেসিডেন্টের কাছেও একটি স্পষ্ট বার্তা যে, ইউক্রেনকে সমর্থন করা কিছু দেশের আর্থিক সমস্যার সুযোগ নিয়ে একদিন এই যুদ্ধে জয়ী হওয়ার চিন্তা থেকে তাকে সরে আসতে হবে। তিনি জিতবেন না।'
এদিকে শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে জাপানের সাথে ১০ বছরের নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন জেলেনস্কি। চলতি বছর ইউক্রেনকে ৪৫০ কোটি ডলার দেয়ার কথা জানিয়েছে টোকিও। এছাড়া ১০ বছর মেয়াদি নতুন নিরাপত্তা চুক্তিতেও সই করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। চুক্তিতে ইউক্রেনে মার্কিন সামরিক ও প্রশিক্ষণ সহায়তার কথা বলা হয়েছে। তবে এটি ওয়াশিংটনকে তার মিত্রের পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য সৈন্য পাঠানোর প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ নেই। কিন্তু ভবিষ্যতে ন্যাটোতে ইউক্রেনের সদস্যপদকে সমর্থন করে দাবি করে এটিকে 'ঐতিহাসিক' চুক্তি বলে প্রশংসা করেছেন জেলেনস্কি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, 'আজ সত্যিই একটি ঐতিহাসিক দিন। কারণ এটি ইউক্রেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী চুক্তি। কারণ চুক্তিতে বলা হয়েছে যে ন্যাটোতে ইউক্রেনের ভবিষ্যত সদস্যপদকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি স্বীকার করে যে আমাদের নিরাপত্তা চুক্তি ন্যাটোতে ইউক্রেনের সদস্যপদের জন্য একটি সেতু।'
তিনদিনের এই সম্মেলনের আলোচনায় জায়গা পাবে আফ্রিকার বিনিয়োগ প্রসঙ্গও। এছাড়াও থাকবে বিশ্বের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাও।