হংকংকে চীনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করেছে আধুনিক নগরী শেনজেন। চীনের সীমান্তবর্তী এই বাণিজ্যিক শহর কেনাকাটা, খাবার-দাবার ও বিনোদন ব্যবস্থার জন্য সুপরিচিত। শহরটিতে আছে সুউচ্চ ভবন, বড় বড় শপিংমলসহ বেশ কয়েকটি বিনোদন পার্ক।
হংকংয়ের সঙ্গে শহরটি দূরত্ব মাত্র ২৭ কিলোমিটার। নিত্যপণ্য থেকে শুরু করে যেকোনো কেনাকাটার জন্য সীমান্ত পাড়ি দিয়ে শেনজেনে যাচ্ছেন হংকংয়ের বাসিন্দারা। মুদ্রার বিনিময় হারের মান কম থাকায় অল্প খরচে সব সুবিধা পাচ্ছেন হংকংবাসী। রেস্টুরেন্টে খাওয়া বা শপিংয়ের জন্য তাদের কাছে জনপ্রিয় জায়গা এখন শেনজেন শহর।
অল্প দূরত্ব এবং উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে আকৃষ্ট হচ্ছেন হংকংয়ের পর্যটকরা। ভিসা জটিলতা না থাকায় সহজেই সীমান্ত পাড়ি দেয়া যায়। যাতায়াতের জন্য আছে ট্রেন, ট্যাক্সি ও বাস। এছাড়া নগদ অর্থ বহনেরও ঝামেলা নেই। সবকিছু হয় অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যমে।
২০২৩ সালে শেনজেন শহর ভ্রমণ করেছে ৫ কোটি ৩০ লাখ হংকংবাসী। গত মার্চে হংকং থেকে রেকর্ড ৯৩ লাখ মানুষ এসেছে শহরটিতে। মূলত উৎসব ঘিরে কম খরচে নাইটলাইফ, শপিং ও অনুষ্ঠান উপভোগের জন্য পর্যটকদের এই ঢল।
হংকংয়ের অর্থনীতি শেনজেনের মাথাপিছু আয়ের প্রায় দ্বিগুণ। চীনের অন্যান্য অংশের তুলনায় অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হংকং। যা শহরের বাসিন্দাদের সীমান্তের ওপারে ক্রয়ক্ষমতা বাড়িয়েছে।
হংকং চিফ সিকিউরিটিজের প্রধান অর্থনীতিবিদ ঝাও ইউ বলেন, 'চীনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযোগের কারণে দুই দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। এছাড়া, হংকংয়ের ব্যবসায়িক আয়ের বেশিরভাগই আসছে চীন থেকে। দুই দেশের বাজারেই ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে।'
হংকংয়ের মুদ্রার বিপরীতে মার্কিন ডলারের মূল্য অনেক বেশি। সে তুলনায় চীনা মুদ্রা ইউয়ানের মান অনেক কম। যার ফলে ক্রেতারা চীনা পণ্য ও সেবার দিকে ঝুঁকছে। হংকংয়ের বাসিন্দাদের আকৃষ্ট করতে নানা সুবিধা চালু করেছে চীনা সরকার।
১৭ মিলিয়ন মানুষের শেনজেন নগরী চীনের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। মুক্তবাজার অর্থনীতির একটি বড় উদাহরণ হয়ে উঠেছে হংকং ও শেনজেন শহর। ১৯৯৭ সালে চীনের স্বায়ত্তশাসনে আসে হংকং। চুক্তি অনুযায়ী ২০৪৭ সালে পর্যন্ত হংকংয়ে এক দেশ, দুই ব্যবস্থা নীতি বাস্তবায়ন হয়।