জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য দেশের মধ্যে প্রায় ১৪৪টি দেশই ফিলিস্তিনকে আলাদা রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে। এবার এ তালিকায় যুক্ত হলো ইউরোপের ৩ দেশ স্পেন, নরওয়ে এবং আয়ারল্যান্ড। এখন ২৭ জাতির ইইউর সদস্যদের ১১টি দেশের স্বীকৃতি পেলো ফিলিস্তিন। বিশ্লেষকদের আশা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাকি সদস্যেরও অনুপ্রাণিত করবে এ সিদ্ধান্ত।
ইউরোপের বৃহত্তম ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী দেশ স্পেন প্রথমে তাদের সিদ্ধান্ত জানায়। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেড্রো সানচেজ বলেন, 'গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরসহ ফিলিস্তিন আলাদা একটি রাষ্ট্র।' তার মতে, ফিলিস্তিন আলাদা একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির পথ অনেকটা খোলাস হবে।
তিনি বলেন, 'ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া মানে ইসরাইলের বিরুদ্ধে যাওয়া নয়। স্পেনের সঙ্গে ইসরাইলেরও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া এই সিদ্ধান্ত হামাসের প্রতি সমর্থনকেও প্রতিফলিত করে না।'
এরপর নরওয়ের সরকারও আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়। ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে নরওয়ে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসপেন বার্থ এইড বলেন, 'দুই দেশের জন্য এই পদক্ষেপ একটি মাইলফলক।'
তিনি বলেন, 'অন্য দেশকেও একই কাজ করতে উৎসাহিত করছি। ইউরোপের আরও বেশ কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়ার ব্যাপারে পরিকল্পনা নিয়েছে। আশা করি তা দ্রুত বাস্তবায়ন করবে।'
ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে সম্মত হয়েছে আয়ারল্যান্ডও। এছাড়া রামাল্লায় আয়ারল্যান্ডের পূর্ণ দূতাবাস ও একজন রাষ্ট্রদূত নিয়োগের ঘোষণা দেন আইরিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন ।
তিনি বলেন, 'ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কয়েক দশক ধরে ১৯৬৭ সালের সীমানার উপর ভিত্তি করে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের কথা বলছে। এবার আমরা সেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পদক্ষেপ নিয়েছি।'
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও এর ঘনিষ্ঠ মিত্রদেশগুলো স্বীকৃতি না দেয়া পর্যন্ত স্বীকৃতির এ সিদ্ধান্ত অনেকটা প্রতীকী হিসেবে রয়ে যাবে। ফ্রান্স ও জার্মানি বলছে, ফিলিস্তিনকে এখনো স্বীকৃতি দেয়ার সময় আসেনি। আর ইসরাইলের মতে এ ধরণের একতরফা পদক্ষেপে মধ্যপ্রাচ্যে সংকট থেকেই যাবে।