কোভিড মহামারির সময় মৃত্যুর মিছিল দেখেছিল বিশ্ব। প্রিয়জনকে হারানোর রেশ কাটেনি। সেই সময় করোনা টিকা কোভিশিল্ড বহু মানুষকে আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়েছিল। এবার জানা গেছে, কোভিশিল্ডের রয়েছে মারাত্বক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। একথা স্বীকার করেছে খোদ টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
এ ঘটনার পর বিশ্বব্যাপী কোভিড টিকা তুলে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। বাজারে আর পাওয়া যাবে না অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ( ৭ মে) দ্য টেলিগ্রাফ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোম্পানি আবেদন করে স্বেচ্ছায় তাদের বিপণন অনুমোদন প্রত্যাহার করবে। এতে আরও বলা হয়, যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশেও একইভাবে আবেদন করা হবে। যারা ভ্যাক্সজেভরিয়া নামে পরিচিত ভ্যাকসিন অনুমোদন করেছে।
এক বিবৃতিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছে, করোনার ভ্যাকসিন আর তৈরি করা হচ্ছে না। এর সরবরাহও হচ্ছে না। বাণিজ্যিক কারণেই সংস্থাটি সব দেশ থেকে করোনা টিকা প্রত্যাহার করে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আদালতে নথি জমা দেয়ার পর গত ৩০ এপ্রিল এক বিবৃতিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকার মুখপাত্র বলেছেন, যারা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন এবং যাদের শারীরিক সমস্যা তৈরি হয়েছে, তাদের জন্য সমবেদনা। রোগীদের সুরক্ষা সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। ভ্যাকসিনসহ বিভিন্ন ওষুধ যেন নিরাপদে সবাই ব্যবহার করতে পারে, সেটা সুনিশ্চিত করাই অ্যাস্ট্রাজেনেকার লক্ষ্য।
গেল ফেব্রুয়ারিতে আদালতে জমা দেয়া একটি নথিতে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, তাদের তৈরি করোনা টিকার কারণে খুব বিরল থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম এর ঘটনা ঘটতে পারে। যার ফলে মানুষের রক্তে প্লাটিলেট কমে যায় এবং রক্ত জমাট বেঁধে যায়।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে ব্রিটিশ হাইকোর্টে ৫১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যেখানে ভুক্তভোগীরা মোট ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ব্রিটিশ-সুইস এই কোম্পানিটির স্বীকারোক্তির কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে বিপুল পরিমাণ জরিমানা গুনতে হতে পারে। এরমধ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়নে এই ভ্যাকসিন ব্যবহার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ব্রিটেন ও অন্যান্য দেশেও এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ বন্ধ করার আবেদন জানানো হয়েছে।