বিদেশে এখন
0

জান্তা সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান ক্যারেন বিদ্রোহীদের

ক্ষমতা দখলের তিন বছর পর এখন মিয়ানমারের জান্তা শাসকদের পতনের ক্ষণগণনা চলছে। চলমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে এমনটাই আভাস বিশেষজ্ঞদের।

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের নেতৃত্ব দখল করে দেশটির প্রভাবশালী সেনাবাহিনী। ক্ষমতাচ্যুত করে শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকারকে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পরই ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে জনতা। দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলের আদিবাসী বিদ্রোহীদের হাত ধরে যা পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধে রূপ নেয়।

অভ্যুত্থানের তিন বছর পেরিয়ে বর্তমানে দেশজুড়ে বিদ্রোহীদের সংঘবদ্ধ আক্রমণে নাকাল মিয়ানমার জান্তা। বাহিনীর কোণঠাসা অবস্থার মধ্যে সেনাপ্রধান জনতার দাবি মেনে নিয়ে বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করলেই ভালো, বলছেন বিদ্রোহীরা। জান্তা সরকারের পতন ঘনিয়ে এসেছে বলেও মত বিশ্লেষকদের।

মিয়ানমারেরর ক্যারেন ন্যাশনাল ইউনিয়নের মুখপাত্র স তাও নি বলেন, ‘আমি মিন অং হ্লাইংকে এটাই বলতে চাই যে দয়া করে আপনি আর সময় নষ্ট করবেন না। জনতার কথা শোনার এটাই ভালো সময় ও সুযোগ, এটুকুই প্রত্যাশা ’

থাইল্যান্ডের থাম্মাসাট ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক দুলিয়াপাক প্রিচারুশ বলেন, পতনের ক্ষণগণনা করছে মিয়ানমার জান্তা। পাহাড়ি সীমান্ত এলাকাসহ মিয়ানমারের সামরিক ঘাঁটিগুলো দখলের মাধ্যমে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে ঘিরে ফেলেছে বিদ্রোহী ও আদিবাসী গোষ্ঠীগুলো। এ পরিস্থিতি কেন্দ্রীয় কমান্ডকে জটিল অবস্থার মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।

সমরশক্তিতে এগিয়ে থাকলেও জনবল আর মনোবলে পিছিয়ে যাচ্ছে সেনারা। লড়াই শুরু হতে না হতেই করছে আত্মসমর্পণ- দাবি বিদ্রোহীদের। গেলো বৃহস্পতিবার থাই সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ শহর মায়াবতীর নিয়ন্ত্রণ হারায় জান্তা, আত্মসমর্পণ করে ৫০০ সেনাসদস্য।

মিয়ানমারের জাতীয় অর্থনীতির লাইফলাইন খ্যাত মায়াবতী থেকে সেনাবাহিনীকে উৎখাতে নেতৃত্ব দেয়া ক্যারেন বিদ্রোহীদের প্রত্যয়, দেশের অন্য সব বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে সামরিক শাসনের অবসান ঘটানো হবে।

স তাও নি আরও বলেন, একটি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য, আর তা হলো ঐক্য। অন্য নৃগোষ্ঠীর সঙ্গে ধাপে ধাপে পা ফেলবো আমরা। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা চালাতে অন্যান্য সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করছি। একটি সাধারণ রাজনৈতিক লক্ষ্য অনুযায়ী নিজ নিজ অবস্থান থেকে জনতার সমর্থন নিয়ে অভ্যুত্থানকারীদের পরাজিত করবো।

সম্প্রতি ব্যাপক জনবল হারানোর সঙ্গে সঙ্গে একের পর এক সীমান্ত এলাকা হারাতে শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। বাংলাদেশ, চীন আর ভারতের পর চলতি সপ্তাহে হারায় থাইল্যান্ডের সঙ্গে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ।

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর