তেল-গ্যাস-কয়লার মতো জীবাশ্ম জ্বালানির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের চিত্রের সঙ্গে পরিচিত অধিকাংশ মানুষ। প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সঙ্গে উন্নত দেশগুলো ঝুঁকছে সৌর, বায়ু, জল এমনকি হাইড্রোজেনচালিত বিদ্যুতের দিকে।
বিদ্যুতের প্রধান সমস্যা হলো এটি সংরক্ষণ করা যায় না। তাই চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হয়। কখনও যোগানের তুলনায় চাহিদা বেড়ে লোডশেডিংয়ের সৃষ্টি হয়। এ সমস্যা সমাধানের জন্য যুক্তরাজ্য, চীন ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলো শত মেগাওয়াট রিচার্জেবল ব্যাটারি প্ল্যান্ট নির্মাণ করেছে। তবে বিশ্বের প্রথম ব্যাটারি প্ল্যান্ট তৈরি করে মার্কিন প্রতিষ্ঠান ক্যাল্পাইন তাক লাগিয়ে দিয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত ৬৮০ মেগাওয়াটের লিথিয়াম আয়ন ব্যাটাারি প্ল্যান্টটির নাম রাখা হয়েছে নোভা পাওয়ার ব্যাংক। প্ল্যান্টটি দেশের জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত আছে। পূর্ণ চার্জে ক্যালিফোর্নিয়ার প্রায় সাত লাখ বাড়িতে টানা কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ পৌঁছাতে পারবে প্ল্যান্টটি। মূলত পিক আওয়ারে জাতীয় গ্রিডের ওপর চাপ কমাতে ব্যবহার করা হবে নোভা পাওয়ার ব্যাংক থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ।
জাতীয় গ্রিড স্টেশন থেকে মাত্রা আধা মাইল দূরত্বেই নোভা পাওয়ার ব্যাংকের অবস্থান। তাই অবস্থানগত কারণে সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে ব্যাটারি প্ল্যান্টটি।
ক্যাল্পাইনের প্রজেক্ট ম্যানেজার রবার্ট স্টিউয়ার্ট বলেন, ‘সাউথ ক্যালিফোর্নিয়া এডিসনের প্রধান সাবস্টেশনের আধা মাইলের মধ্যে ব্যাটারি প্ল্যান্টটি অবস্থিত। তাই বিদ্যুৎ সাবস্টেশনে পৌঁছানো এবং গ্রিডে পুনরায় বিতরণে সুবিধা পাওয়া যায়।’
যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ সংরক্ষণ প্ল্যান্টগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র নোভা পাওয়ার ব্যাংকই ৫৫ শতাংশ বিদ্যুৎ সংরক্ষণ করতে পারে। অর্থ সাশ্রয়ী ও পরিবেশ উপযোগী হওয়ার পাশাপাশি গ্রাহকদের সুবিধা দিচ্ছে ব্যাটারি প্ল্যান্টটি। চলতি বছর ৬২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে। বাকি ৬০ মেগাওয়াট ২০২৫ সালে যুক্ত হবে।
২০৪৫ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যা পূরণে অঙ্গরাজ্যটির প্রয়োজন হবে ৫০ গিগাওয়াট ব্যাটারি স্টোরেজ। তবে বর্তমানে ক্যালিফোর্নিয়ার বিদ্যুৎ সংরক্ষণ ক্ষমতা ৭ গিগাওয়াট। ক্যাল্পাইনের মতো অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাটারি প্ল্যান্ট তৈরিতে এগিয়ে আসলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।